উদ্ধোধন করবেন ৩শ ২৪ কোটি টাকার মেঘা প্রকল্পের
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনা খুলনায় আসছেন আগামীকাল সোমবার। তার এ আগমন উলক্ষ্যে নগরী নতুন রুপে সাজতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে এরই মধ্যে সব প্রস্তুুতি শেষ করা হয়েছে। খুলনা উন্নয়নের ৩শ ২৪ কোটি টাকার মেঘা প্রকল্পের উদ্ধোধন করবেন তিনি। এ ছাড়া দলীয় বিভাগীয় জনসভায় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে নানা দিকনির্দেশনার বক্তৃতা করবেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর খুলনায় সফর উপলক্ষে গোটা মহানগর এলাকায় নিরাপত্তা চাদরে ঢেকে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
খুলনা জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের আয়োজনে আগামীকাল সোমবার ১৩ নভেম্বর দুপুর ২টায় সার্কিট হাউস ময়দানে মহাসমাবেশে ভাষন দিবেন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দলীয় প্রধানের এই জনসভাকে ঘিরে বিশাল শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে ব্যানার, তোরন, রং বেরংয়ের ফেষ্টুন আর পোষ্টারে গোটা শহর ছেয়ে গেছে। উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে খুলনা বিভাগের ১০জেলায় মিছিল গনসংযোগে ব্যস্ত দলীয় নেতা কর্মীরা। এবারের জনসভা মঞ্চ তৈরি হবে নৌকা ও পদ্মা সেতুর আদলে। চলছে মঞ্চ তৈরির কাজ। খুলনা সার্কিট হাউস মাঠের পশ্চিম পার্শে ১৮০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪০ ফুট প্রস্থ নৌকার অনুকরণে মঞ্চ তৈরী করা হয়েছে। এই মঞ্চে তুলে ধরা হয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অগ্রযাত্রার প্রতিক পদ্মা সেতু। নৌকা ও পদ্মা সেতুর আদলে তৈরী করা মঞ্চে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের নেতারা সহ খুলনা বিভাগের প্রায় ৪শ আসন গ্রহন করবেন। মূল মঞ্চের বাম পার্শ্বেই ২৪ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৬
ফুট প্রস্থ প্রস্তুত করা হয়েছে উদ্ধোধনী মঞ্চ। এই মঞ্চে খুলনার উন্নয়নের ২৪টি মেঘা প্রকল্পের উদ্ধোধন ও ৫টির ভিত্তি প্রস্তুত স্থাপন করবেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
খুলনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ওই প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে গণপূর্ত বিভাগের নগরীর সাউথ সেন্ট্রাল রোডে ১৯৭১ গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের ভবন নির্মাণ কাজ, শামসুর রহমান রোডে সিভিল সার্জনের অফিস ভবন ও বাসভবন, খুলনার পাইকগাছা
উপজেলায় একটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন, খুলনা শিক্ষানবিশি প্রশিক্ষণ দপ্তর সংস্কার ও আধুনিকায়ন, বিএসটিআই’র ১০তলা আঞ্চলিক অফিস স্থাপন ভবন। বিটাক, খুলনা কেন্দ্রে ১০ তলা বিশিষ্ট নারী হোস্টেল ভবন নির্মাণ। পাইকগাছা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ভবন নির্মাণ (সিভিল, স্যানিটারি ও বৈদ্যুতিক), নগরীর দৌলতপুরে কৃষি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটের ৪তলা ছাত্র হোস্টেল নির্মাণ। সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে, সুন্দরবনে পরিবেশবান্ধব পর্যটন (ইকোট্যুরিজম) সুবিধা সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত শেখেরটেক ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ডুমুরিয়া টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৫তলা একাডেমিক কাম ৪ তলা প্রশাসনিক ও ওয়ার্কসপ ভবন নির্মাণ, বয়রা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খুলনা কলেজিয়েট স্কুল, সরকারি এল বি কে ডিগ্রি মহিলা কলেজ, সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ, চালনা বাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, তালিমুল মিল্লাত রহমাতিয় ফাজিল মাদরাসা, নজরুলনগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় এবং আরআরএফ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটিতে ৬ তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ, আড়ংঘাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৪তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ডুমুরিয়া উপজেলার চরচরিয়া শিবনগর সড়কে ভদ্রা নদীর ওপর ৩১৫ দশমিক ৩০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ কাজ। উদ্বোধন প্রকল্পের তালিকায় রয়েছে, খুলনা সিটি করপোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্থা উন্নয়ন, পুনর্বাসন প্রকল্প এবং খুলনা শহরে জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় খালিশপুর বিআইডিসি রোডে ড্রেন, ফুটপাত নির্মাণসহ রাস্তা প্রশস্তকরণ ও পুননির্মাণ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে, নগরীর দৌলতপুরে অতিরিক্ত পরিচালকের ৬ তলা বিশিষ্ট নবনির্মিত অফিস ভবন। এছাড়া ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনযোগ্য প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে, খুলনা সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মাথাভাঙ্গা এলাকায় স্যানিটারি ল্যান্ডফিল নির্মাণ, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতাধীন দিঘলিয়া টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের ৫তলা একাডেমিক কাম ৪তলা প্রশাসনিক ও ওয়ার্কসপ ভবন নির্মাণ কাজ। উদ্ধোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিন খুলনা বিভাগীয় জনসভায় ভাষন দিবেন । সভায় বিএনপি- জামায়াতের ধ্বংসের নীতিবাজক ও গণতন্ত্র বিরোধী রাজনীতির বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ন বক্তব্য রাখবেন তিনি। দেশের ১৬ কোটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার আহবান করবেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে নানা দিকনির্দেশনার বক্তৃতা করবেন, আওয়ামীলীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দলীয় প্রধানের জনসভা সফল করার জন্য খুলনা মহানগর, জেলা, থানা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে মূল দলের পাশাপাশি সহযোগী সংগঠনগুলো প্রস্তুতি সভা, বর্ধিত সভা ও কর্মীসভা করছে। খুলনা অঞ্চলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অভিভাবক হিসেবে পরিচিত প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি নিজে উপস্থিত থেকে তদারকি করছেন। দলের কেন্দ্রীয় বেশ কয়েকজন নেতা খুলনায় এসে প্রস্তুতি সভা করেছেন।
বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুস্পুত্র শেখ হেলাল উদ্দীন এমপি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের সংগঠন, জনমূখী সংগঠন। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ রাজনীতি করে। অনেকেই বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে সামরিক শাসকের সাথে তালে তাল মিলিয়ে ছিলো। কিন্তু তৃণমূলের নেতাকর্মীরা শক্ত ছিলো বলেই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হয়েছে। জনগনের ভোটে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।
তিনি বলেন, যশোর, রাজশাহী ও রংপুরসহ সারাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা দেখে বিএনপি মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। বিএনপি এর আগের অবস্থা নেই। সারা দেশের জনগণ স্বাধীনতা বিরোধী গোষ্ঠী বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। বিএনপি জনসমর্থন হারিয়ে বিদেশীদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। নানা ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আওয়ামী লীগ যদি তৃণমূল পর্যায়ে ঐক্যবদ্ধ থাকে, তাহলে তাদেরকে হারানোর শক্তি কারো নেই। তাই ঐক্যবদ্ধ থেকে আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে আবারও পঞ্চমবারের মত বিজয়ী করতে হবে।
কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, এ অঞ্চলের মানুষের সকল প্রত্যাশাই পর্যাক্রমে পূরন করেছে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অভূতপূর্ণ উন্নয়ন করেছেন তিনি। তাই রাষ্ট্র প্রধানকে দেখার জন্য দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের মধ্যে ব্যাপক গণজানগরন সৃষ্ঠি হয়েছে। যে কারণে খুলনার এ জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হবে বলে আশা করছি।
তিনি বলেন, বিএনপি- জামায়াতের ধ্বংসের নীতিবাজক ও গণতন্ত্র বিরোধী রাজনীতির বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ন বক্তব্য রাখবেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া তিনি ১৬ কোটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার আহবান করবেন বলেও জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় এই নেতা।
নগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক জানান, জনসভার দিন সার্কিট হাউস মাঠে থাকবেন নারী কর্মীরা। পুরুষ নেতাকর্মীরা থাকবেন মাঠের চারপাশের সড়কগুলোতে। মাঠ ছাড়াও নগরীর কাস্টমস ঘাট থেকে শিববাড়ি মোড়, জেলখানা ঘাট, সদর থানার মোড়, হাদিস পার্ক ও হাজী মুহসীন রোডে মাইক দেওয়া হবে। শিববাড়ি মোড়সহ বেশ কয়েকটি স্থানে এলইডি মনিটরে দেখানো হবে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ।
তিনি জানান, বাগেরহাট, পিরোজপুর ও গোপালগঞ্জ থেকে যেসব পুরুষ নেতাকর্মী আসবেন তারা রূপসা ঘাটে নেমে ফেরিতে পার হবেন। এ জন্য রূপসা ঘাটে ৫টি ফেরি দেওয়া হচ্ছে। নারী কর্মীদের বহনকারী বাস নগরীর নতুন বাজার পর্যন্ত আসবে। এ ছাড়া জেলখানা ঘাটে ৩-৪টি ফেরি দেওয়া হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহের নেতাকর্মীর জন্য ওই দিন সকালে একটি স্পেশাল ট্রেন খুলনায় আসবে।
খুলনা মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা বলেন, গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সরকার খুলনাঞ্চলে কয়েকটি মেগা প্রকল্পসহ নানামুখী উন্নয়ন হয়েছে। যার সুফল সাধারন মানুষ ভোগ করছেন।
এসকল উন্নয়নের বাইরে আরও বেশকিছু উন্নয়নের দাবী-দাওয়া প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরা হবে। ভবিষ্যতে র্স্মাট বাংলাদেশ গড়তে খুলনাঞ্চলও ভুমিকা রাখতে পারবে। প্রধানমন্ত্রীর এই খুলনা সফরের মাধ্যমে বিএনপি জামায়েতের সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও ধ্বংসাত্নক কর্মকান্ডের জবাব দেয়া হবে বলেও জানান, খুলনা মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এমডি এ বাবুল রানা।
এদিকে রাষ্ট্রপ্রধানের খুলনায় সফর উপলক্ষে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ। সাদা পোষাকে ৩ হাজারেরও বেশী ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গোটা মহানগর এলাকায় নিরাপত্তা চাদরে ঢেকে দিয়েছে। কেএমপি কমিশনার মোজাম্মেল হক জানান, জনসভাস্থলে পোশাকে এবং সাদা পোশাকে কাজ করবে পুলিশ। সার্কিট হাউস মাঠ ও আশপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
গোটা নগরী নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হবে। জনসভাস্থলে আসা এবং জনসভা শেষে যাতে লোকজন নির্বিঘ্নে ফিরে যেতে পারে সেজন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বর্তমান সরকারের মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খুলনায় এটি ৬ষ্ঠ সফর। এর আগে চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি ব্যক্তিগত সফরে খুলনায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি দিঘলিয়ার নগরঘাট এলাকায় তার মা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে কেনা পাট গোডাউন পরিদর্শন করেন এবং নিজের চাচা বাড়িতে (বঙ্গবন্ধুর ছোট ভাই শেখ আবু নাসের) পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটান।
রাষ্ট্রপ্রধানের এ সফরের মাধ্যমে খুলনাকে একটি অর্থনৈতিক জোন হিসাবে গড়েতোলা সহ দ্রুত তাদের প্রানের দাবি গুলো বাস্তবায়ন হবে এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।
অন্যদিকে খুলনা বিমান বন্দর প্রকল্পের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে দ্রুত কাজ শুরুসহ প্রধানমন্ত্রীর কাছে ১৮ দফা দাবি জানিয়েছে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি। শনিবার বেলা ১১টায় খুলনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন, সংগঠনের সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দক্ষিণ অঞ্চলের উন্নয়নে এখন ধারাবাহিকভাবে যে সকল প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে সেগুলো আগামীর খুলনাকে সমৃদ্ধ করবে। খুলনার ভৌগলিক সম্ভাবনাকে কার্যকরভাবে কাজে লাগাতে পারলে আগামী ১০/১৫ বছরের মধ্যে খুলনাঞ্চল দক্ষিণাঞ্চলের রাজধানী হিসেবে বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেবে। ফলে ভাগ্য পরিবর্তন হবে খুলনা উপকূলের প্রায় ৪ কোটি মানুষের।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খুলনায় স্বাগত জানানোর পাশাপাশি ১৮ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে খুলনা বিমান বন্দর প্রকল্পের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে দ্রুত কাজ শুরু করা, খুলনা-মোংলা-ভাঙা মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীত, রূপসা-তেরখাদা ও দিঘলিয়াকে খুলনা শহরের সাথে সংযোগের জন্য টানেল নির্মাণ, মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ড্রেজিং ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা, খুলনায় পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা, খুলনা-যশোর মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীত করা, খুলনায় অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়ন, স্বতন্ত্র ক্যান্সার হাসপাতাল স্থাপন করতে হবে, আমদানি-রপ্তানির সুবিধার্থে মোংলা পোর্টের অদূরে কন্টেইনার স্টেশন স্থাপন, খুলনার পাটকলসহ বন্ধ সকল মিল-কলকারখানা চালুর ব্যবস্থা, সুন্দরবনকে ঘিরে পর্যটন হাব গড়ে তোলা, ভৈরব, রূপসা ও পশুর নদীর নাব্যতা বাড়াতে নিয়মিত ড্রেজিং এর ব্যবস্থা, খুলনায় পূর্ণাঙ্গ টেলিভিশন কেন্দ্র চালু, সরকারি উদ্যোগে খুলনায় বোটানিক্যাল গার্ডেন এবং একটি চিড়িয়াখানা স্থাপন, খুলনা প্রেসক্লাবের বহুতল ভবন নির্মাণে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ, খুলনায় মেরিন একাডেমি ও ক্যাডেট কলেজ প্রতিষ্ঠা, খুলনা আলিয়া মাদ্রাসা ও মহিলা আলিয়া মাদ্রাসাসহ আহসান উল্লাহ কলেজ, হাজী আব্দুল মালেক কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, দৌলতপুর দিবা-নৈশ কলেজ সরকারিকরণ করা, খুলনা-যশোর-দর্শনা ডবল রেললাইন স্থাপন, খুলনা থেকে রেলযোগে ঢাকা যাওয়ার জন্য খুলনা-গোপালগঞ্জ রেললাইন স্থাপন, মুন্সিগঞ্জ- সাতক্ষীরা-যশোর রেললাইন স্থাপন এবং খুলনা-ঢাকা কালনা সেতু হয়ে সরাসরি রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা, শহররক্ষা বাঁধ ও রিভারভিউ পার্ক এবং খুলনায় নভো থিয়েটার দ্রুত বাস্তবায়ন ও ডায়াবেটিক হাসপাতালে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ।
এ সময় সংবাদ সম্মেলেন উপস্থিত ছিলেন, মহাসচিব কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মাদ আলী, অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির, ইঞ্জিনিয়ার আজাদুল হক, সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব শেখ মোশাররফ হোসেন, মকবুল হোসেন মিন্টু, শাহীন জামাল পন, মিজানুর রহমান বাবু, অধ্যাপক আবুল বাসার, চৌধুরী রায়হান ফরিদ, জোবায়ের আহমদ খান জবা, চৌধুরী মামনুরান জাকির খুকুমনি, মিনা আজিজুর রহমান, স্বপনকুমার গুহ, এ্যাডভোকেট মিনা মিজানুর রহমান।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।