ঝিনাইদহে শিক্ষার্থী গণধর্ষণ মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন

আগের সংবাদ

কোনো শক্তিই আওয়ামী লীগকে সরাতে পারবে না 

পরের সংবাদ

ব্যাংক এশিয়ার এজেন্টের ভুলে যশোর সদরে আটকে গেছে তিন হাজার ভাতা

প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২৩ , ১২:০১ পূর্বাহ্ণ আপডেট: নভেম্বর ৮, ২০২৩ , ১১:২৩ অপরাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য সরকারি সকল ভাতা সবার হাতে দ্রুত পৌছে দেওয়ার জন্য প্রতিটা ইউনিয়ন পরিষদে একটি করে এজেন্টে ব্যাংক চালু করে দিয়েছে। এই এজেন্ট ব্যাংকিং’র দায়িত্ব পায় ‘ব্যাংক এশিয়া’। তবে ব্যাংক এশিয়ার এজেন্টের ভুলে যশোর সদর উপজেলায় বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা এখনো পায়নি প্রায় তিন হাজার মানুষ। ব্যাংক হিসাবে টাকা আসার পরও তা তুলতে পারছেন না ভাতাভোগীরা।

ভাতাভোগীরা জানিয়েছেন, ব্যাংক এশিয়ার এজেন্টের কাছে গিয়ে তাঁরা দেখতে পান, আঙুলের ছাপ মিলছে না। ছাপ না মেলায় তাঁদের টাকা দেওয়া হয়নি। ভাতার টাকা না পেয়ে তাঁরা উদ্বিগ্ন।

উপজেলার ৮নং দেয়াড়া ইউনিয়নের নারাঙ্গালী গ্রামের ৯০বছর বয়সী সাইমোনি বেগম জানান, গত সপ্তাহে ব্যাংক এশিয়ার নিকটস্থ এজেন্টের কাছে বয়স্ক ভাতার টাকা তুলতে যান। তবে হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলির ছাপ না ওঠায় এজেন্ট তাঁকে টাকা দেননি। এরপর তিনি বাড়ির হলুদ, সবজি বিক্রি করে ভ্যান ভাড়া করে সমস্যা সমাধান করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদে ৫দিন যান। তবে বিভিন্ন সমস্যা দেখিয়ে তাকে এখনো টাকা দেওয়া হয়নি।

তিনি আরো জানান, ভ্যান ওয়ালা আমার কাছে এখনো টাকা পাবে। আমি খুব কষ্টে জীবন যাপন করছি। এই বিধবা ভাতার টাকা দিয়ে আমার সংসার চলে।

ইউনিয়নে এমনি টাকা তুলতে না পেরে হতাশ ইউনিয়নের আলমনগর গ্রামের ৯০বছর বয়সী আবু বক্কর, আমদাবাদ গ্রামের ৮৫ বছর বয়সী পারতোষি ঘোষ, ফরিদপুর গ্রামের ৮০বছর বয়সী আলী আকবরসহ আঙুলের ছাপে আটকে পড়া একাধিক মানুষ।
সকলের একি অভিযোগ করে বলেন, অনেকের এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। মোবাইলে তিন মাসের ১ হাজার ৮০০ টাকার ম্যাসেজ পেয়ে তুলতে পারছেনা। ওরা বলছে, আমাদের আঙুলের ছাপ নেচ্ছে না। এখন টাকা ওঠানো যাবে না।

নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে ব্যাংক এশিয়ার এক কর্মকর্তা জানায়, বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা ব্যাংক এশিয়ার মাধ্যমে দেওয়া হয়। আঙুলের ছাপ দিয়ে ভাতাভোগীদের টাকা তুলতে হয়। শুরুতে আঙুলের ছাপ নিয়ে কিছু হিসাব নম্বর স্ব স্ব ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যাংকের কর্মকর্তাদের আইডি থেকে খোলা হয়েছে। কিছু খোলা হয়েছিল ব্যাংকের এজেন্টদের আইডি থেকে। এজেন্টের মধ্যে কেউ কেউ হিসাব নম্বর খোলার সময় অনিয়ম করেছেন বলে অভিযোগ আছে। তাঁরা ভাতাভোগীর আঙুলের ছাপ না নিয়ে অন্যের আঙুলের ছাপ নিয়ে অনেকের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এমন কিছু অভিযোগ ব্যাংকের সদর দপ্তর পেয়েছে। তাই এজেন্টদের মাধ্যমে খোলা হিসাব নম্বরের আঙুলের ছাপ ব্যাংক সার্ভার থেকে মুছে দেওয়া হয়েছে। এতে অনেকের টাকা উত্তোলন আটকে আছে। নতুন করে আঙুলের ছাপ নিয়ে ব্যাংকের নির্ধারিত প্রতিনিধির আইডি থেকে হিসাব খুলে টাকা দেওয়া হবে।

তিনি আরো জানায়, সদরে প্রায় তিন হাজার মানুষের এমন সমস্যা হয়েছিল। এরমধ্যে প্রায় অর্ধেক মানুষের সমাধান হয়ে গেছে বাকিটা ৭-১০ দিনের ভিতরে সমাধান হয়ে যাবে।

ব্যাংক এশিয়ার তথ্য মতে, উপজেলার প্রতি ইউনিয়নে ২০০ থেকে ৫০০ ভাতাভোগীর টাকা আটকে গেছে। যাঁরা টাকা তুলতে পারেননি। তাঁদের নিজ নিজ ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে উদ্যোক্তার কাছে নাম ও মোবাইল নম্বর দিয়ে আসতে বলা হচ্ছে। সময় নির্ধারণ করে আমাদের প্রতিনিধি ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে সবাইকে ডেকে আঙুলের ছাপ নেবেন। তখন টাকা তুলতে আর সমস্যা হবে না।
সদর উপজেলার ৮নং দেয়াড়া ইউনিয়ন পরিষদে গত মঙ্গলবার আঙুলের ছাপ নিতে আসা ব্যাংক এশিয়ার যশোর শাখার রিলেশন অফিসার অপুর্ব সরকার বলেন, আঙুলের ছাপ মুছে যাওয়ায় কারনে তারা টাকা উত্তলন করতে পারছেনা। এবিষয়ে আমরা আঙুলের ছাপ আপগ্রেটের কাজ করছি। আশা করছি দ্রুত এ সদস্যার সমাধান হবে যাবে।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আশিকুজ্জামান তুহিন বলেন, ‘টাকা তুলতে না পেরে অনেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। আমরা ব্যাংক এশিয়ার কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি তাদের লোকবল কম থাকায় একটু সময় লাগছে’।

তিনি আরো জানান, আমরা তাদের লোকবল বাড়াতে বলেছি। আশা করছি ১৫-২০ দিনের ভিতরে সকলে এই ভাতার টাকা তুলতে পারবে। এবং সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়