২৬ বা ২৮ নভেম্বর প্রকাশ হতে পারে এইচএসসির ফল

আগের সংবাদ

হঠাৎ বদহজম? জেনে নিন দ্রুত সমাধান

পরের সংবাদ

অবরোধে শিল্প-কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২৩ , ৫:৪৩ অপরাহ্ণ আপডেট: অক্টোবর ৩১, ২০২৩ , ৫:৪৩ অপরাহ্ণ

বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ কর্মসূচি ঘিরে শিল্প-কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ডলার ও রিজার্ভ সংকটের কারণে শিল্পের কাঁচামাল আমদানি কমে যাওয়ায় এমনিতেই উৎপাদন কমতে ছিল। রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে তা আরো খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় গত কয়েক দিনে ঘটে যাওয়া পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং পরবর্তী করণীয় নির্ধারণের জন্য গতকাল সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জাতীয় কোর কমিটির বৈঠক ডাকেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

এতে শিল্প পুলিশের প্রধানসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর প্রধানরা অংশ নেন।

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বৈঠকে বিএনপি-জামায়াতের অবরোধে সহিংসতার আশঙ্কার কথা জানান অংশগ্রহণকারীরা। এ পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসারসহ সব বাহিনীকে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। বিশেষ করে শিল্পাঞ্চল এলাকায় কিভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়, এ জন্য বিশেষ পরিকল্পনা নিতে বলা হয়েছে।

বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ নানা কারণে গত কয়েক মাস ধরে অর্থনীতির বেশির ভাগ সূচক নেতিবাচক প্রবণতায় আছে। কয়েকটি নিত্যপণ্যের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। এর মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা অর্থনীতিকে আরো চ্যালেঞ্জের মুখে ছুড়ে দিচ্ছে।

গতকাল সোমবার মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে সাভার ও গাজীপুরে পোশাক শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছেন। গাজীপুরে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়াধাওয়ি হওয়ায় আহত হয়ে একজন শ্রমিক মারা গেছেন। এরপর একটি কারখানায় আগুনে পুড়ে মারা গেছেন আরেক পোশাক কারখানার কর্মী।

বৈঠকে উপস্থিত শিল্প পুলিশের প্রধান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠকে শিল্পাঞ্চল পুলিশকে বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। শিল্পাঞ্চলে যাতে নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয় তা নিশ্চিত করতে বলেছেন।

শিল্প-কারখানার উৎপাদন যাতে ব্যাহত না হয়, সে জন্য সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘শিল্প-কারখানা নিয়ে আশঙ্কা অনেক আগে থেকেই ছিল। এখন যেটা ঘটছে বা ঘটবে সেটা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছি। তবে শিল্পাঞ্চল পুলিশের জনবল কম হওয়ায় কিছু সমস্যা হচ্ছে।

বৈঠকে রাজনৈতিক কর্মসূচিকেন্দ্রিক নাশকতা নিয়েও আলোচনা হয়। পুলিশের একাধিক সূত্রে জানা যায়, নাশকতা প্রতিরোধ কমিটির আকার বড় হওয়ায় সহজে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ কমিটিকে সহযোগিতা করবে কোর কমিটি। কোর কমিটি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, র্যাবের মহাপরিচালক, বিজিবির মহাপরিচালক, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষ বাহিনীর মহাপরিচালক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) মহাপরিচালক, এসবির প্রধান, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের প্রধান ও বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরা।

ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জিয়াউল আহসান বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলা ঠিক রাখার বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রাজনৈতিক সংকট এখনো অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেনি। কিন্তু রাজনৈতিক অঙ্গনে হরতাল ও অস্থিতিশীলতা চলতে থাকলে অর্থনৈতিক সমস্যা আরো প্রকট হবে। কারণ, সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কঠিন অবস্থায় আছে। এর মাঝে রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি হলে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে।

গতকালের বৈঠক সম্পর্কে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং এসংক্রান্ত কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য এ বৈঠক করা হয়েছে। জাতীয় কোর কমিটির বিষয় আমরা প্রকাশ করি না। এই বৈঠকের কোনো রেজল্যুশনও করা হয় না। তাই এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।

জেলা ও বিভাগীয় কোর কমিটি কর্যকর নয়

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং এসংক্রান্ত কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য ২০১৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বিভাগীয় পর্যায়ে কোর কমিটি গঠন করে। কমিটির সভাপতি করা হয় বিভাগীয় কমিশনারকে। মহানগর পুলিশ কমিশনার ছিলেন ওই কমিটির সদস্য।

এ ছাড়া বিজিবির আঞ্চলিক কমান্ডার, পুলিশের উপমহাপরিদর্শক, ডিজিএফআইয়ের বিভাগীয় অফিসপ্রধান, র‌্যাবের অধিনায়ক, কোস্ট গার্ডের জোনাল কমান্ডার, এনএসআইয়ের বিভাগীয় অফিসপ্রধান, আনসার ও ভিডিপির পরিচালক, হাইওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার এবং অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারকে কমিটির সদস্য করা হয়েছিল।

এই কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছিল, কমিটি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার প্রয়োজনে বিভিন্ন সূত্র থেকে আগাম তথ্য সংগ্রহ এবং উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেবে। জেলা কোর কমিটি জেলা সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ কমিটিকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা দেবে। একই সঙ্গে জরুরি পরিস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে।

২০১৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং এসংক্রান্ত কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য জেলা কোর কমিটি গঠন করা হয়। জেলা পর্যায়ে সভাপতি করা হয় জেলা প্রশাসককে (ডিসি)। তবে এসব কমিটির বৈঠক ও কাজের খবর খুব বেশি জানা যায়নি।

অক্টোবর ৩১, ২০২৩ at :৭:৪২(GMT+06) রুপ্র/আক/ঢাঅ/আহা

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়