শাকিব তো আছেই

আগের সংবাদ

যশোরে ডেঙ্গুতে দুই জনের মৃত্যু

পরের সংবাদ

শতাধিক যানবাহন ও স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ

দিনভর বিএনপির তাণ্ডব: এক পুলিশ নিহত, আহত ৪১ পুলিশসহ কয়েকশ

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২৩ , ২:৫৩ পূর্বাহ্ণ আপডেট: অক্টোবর ২৯, ২০২৩ , ৩:১০ পূর্বাহ্ণ

রাজধানীর ফকিরাপুল চার রাস্তার মোড়। বিএনপির সমাবেশের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছিলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পারভেজ। ফকিরাপুল মোড়ে পুলিশের ওপর যখন বিএনপির হামলা হয় তখন পারভেজসহ ৪ পুলিশ একটি ভবনে ঢুকে পড়েন। ভয়ে তাদের সঙ্গে ভবনটিতে ঢোকেন পথচারী রায়হান। সেখান থেকে হঠাৎ ওই পুলিশ সদস্য বাইরে বেরিয়ে যান। তখনই তার ওপর হামলা চালায় বিএনপির একদল কর্মী। তার মাথায় আঘাত করে। ইটের টুকরা ছড়ানো রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন পারভেজ। বিকাল ৪টায় গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কনস্টেবল পারভেজ মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলার চরকাটরী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সেকান্দারের ছেলে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া।


কনস্টেবল পারভেজের রক্তের মধ্য দিয়ে ফের জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতির শুরু। সহিংসতার পুরনো চেহারায় ফিরেছে বিএনপি। গতকাল ভয়-শঙ্কা-উদ্বেগের ২৮ অক্টোবর, সেই পুরনো রক্তের হলিখেলার রাজনৈতিক সংঘাতের পথে হাঁটছে বাংলাদেশ। বাসে আগুন, দফায় দফায় সংঘর্ষ, টিয়ার শেল, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা, পুলিশ হাসপাতালে হামলা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলা, ইটপাটকেল ছোড়া- সবমিলিয়ে রণক্ষেত্র গোটা রাজধানী।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজপথে সহিংসতা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে হরতাল-অবরোধের মতো সহিংস কর্মসূচি থেকে দীর্ঘদিন বিরত থাকলেও আবারো সেই পথে ফিরল বিএনপি। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে-পরে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি দিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক সহিংসতা চালিয়েছিল বিএনপি। এতে জনজীবনে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু তাদের সেই আন্দোলন সফলতার মুখ দেখেনি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের বিরোধিতা করে বিএনপি জোটের ভয়াবহ সন্ত্রাসের রাজত্ব কেউ ভোলেনি। তখন শত শত যানবাহন পুড়িয়ে দেয়া হয়। পেট্রোল বোমার আঘাতে দগ্ধ মানুষের আহাজারিতে হাসপাতালগুলোর বাতাস ভারি হয়ে ওঠে।

পবিত্র উপাসনালয় মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, গির্জায়ও আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ধ্বংস করা হয় শত শত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি লাখ লাখ গাছও। নির্বাচনের দিন প্রিসাইডিং অফিসারসহ হত্যা করা হয় ২৬ জন নিরীহ মানুষকে। সারাদেশে ৫৮২টি ভোটকেন্দ্রে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয়। এরপর নির্বাচনের পর তাদের সহিংসতার রাজনীতি বন্ধ ছিল। গত কয়েক মাস ধরে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে মাঠে রয়েছে সাবেক এই বিরোধী দল।

বিভাগীয় সমাবেশ শেষ করে কর্মসূচি পালনের জন্য রাজধানী ঢাকাকেই বেছে নেয় দলটি। গত ১৯ অক্টোবরের সমাবেশ থেকে ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের মহাযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওইদিনই বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করার

সিদ্ধান্ত নেয় আওয়ামী লীগ। দুদলের মুখোমুখি কর্মসূচি নিয়ে জনমনে অনেক আতঙ্ক, উদ্বেগ ছিল। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও প্রস্তুত ছিল।

পছন্দের ভেন্যু নয়াপল্টনেই গতকাল শনিবারের মহাসমাবেশের অনুমতি পেয়েছিল বিএনপি। দলটির নেতাপ্রতিশ্রুতি ছিল, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবেন। এদিন লোক সমাগম হওয়ার কথা ছিল দুপুর ২টা থেকে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সমাবেশস্থলে আসতে থাকেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।

একপর্যায়ে কাকরাইল মোড়ে তারা গাড়ি ভাঙচুর শুরু করেন। বাস, পিকআপসহ বেশ কয়েকটি গাড়িতে ভাঙচুর চালান নেতাকর্মীরা। এতে কাকরাইল এলাকা পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। ব্যাপক ভাঙচুর ও আগুন জ্বালানোর ঘটনা ঘটে। আগুন দেয়া হয় পুলিশ বক্সে।

এমনকি এ সময় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা চালায় বিএনপি নেতাকর্মীরা। পুলিশ জানিয়েছে, বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হয়ে ৪১ জন পুলিশ সদস্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ২২ জন এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৯ জন আহত পুলিশ সদস্য চিকিৎসাধীন। সংঘর্ষে পথচারীসহ অসংখ্য মানুষ আহত হয়েছেন।

যারা পুলিশের গায়ে যারা হাত তুলেছে তাদের বিচার হবে- মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জবাব দিতে হবে, প্রধান বিচারপতির বাড়িতে কারা হামলা করেছে? তাদের ছাড় দেয়া হবে না। বিএনপি সন্ত্রাসী দল। তারা তাদের পুরনো চেহারা জাতির সামনে তুলে ধরেছে। এদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। এদের অপরাধের বিচার হবে। আমরা শান্তি চাই। এই অপরাধীদের স্বভাব আজকে পরিষ্কার। তাদের আর ক্ষমা করা যায় না।

এদিকে ঢাকার কাকরাইলে একটি বাসে আগুন দিয়েছে বিএনপিসমর্থকরা। গতকাল বিকাল সোয়া ৫টার দিকে কাকরাইলে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বাসটিতে আগুন দেয়া হয়। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসটি আগুনে জ্বলতে দেখা যায়। বাসের আগুন উপরে থাকা বিদ্যুতের তারেও ছড়িয়ে পড়ছিল। পুড়তে থাকা বাসটির পাশেই রাস্তায় বসে কাঁদছিলেন চালক মনির হোসেন।

তিনি বলেন, আজ (গতকাল) পুলিশ সদস্যদের আনা-নেয়ার জন্য বাসটি নিয়োজিত ছিল। বাসে একদল পুলিশ সদস্যকে নিয়ে বিকাল ৫টার সময় তিনি এখানে আসেন। পুলিশ সদস্যরা নেমে যাওয়ার ১৫ মিনিটের মধ্যে বাসে আগুন দেয়া হয়।

এছাড়া পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের মধ্যে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতাল চত্বরে ঢুকে সাতটি গাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি অ্যাম্বুলেন্স, একটি মাইক্রোবাস ও পাঁচটি মোটরসাইকেল রয়েছে। দুপুর ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে হামলা, ভাঙচুরের পর আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিএনপি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে ঢিল ছুড়ে রাস্তায় ফেলার পর ছাত্রদলের এক নেতা পুলিশ সদস্যকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে। ক্ষণে ক্ষণে তারা ঢিল ছুড়েছে, আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। ককটেল বিস্ফোরণ করছে। তারা সবাই হাতে লাঠি নিয়ে এসেছে। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের ভেতরে ৩টি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।

সেখানেও পুলিশ ধৈর্যসহকারে মোকাবিলা করেছে। রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতালেও আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। সেখানে অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দিয়েছে। বেশ কিছু সরকারি বেসরকারি স্থাপনায় আগুন দিয়েছে। জাজেজ কমপ্লেক্সে আগুন দিয়েছে।
এদিকে পুলিশ হামলা করে তাদের সমাবেশ ভণ্ডুল করে দিয়েছে এমন দাবি করেছে বিএনপি।

এ ঘটনায় নেতাকর্মী ও জনগণকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আর বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নয়াপল্টনে বিএনপির শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে পুলিশের হামলার প্রতিবাদে আজকের হরতাল দিয়েছেন তারা।

আগুনসন্ত্রাসীদের প্রতিহত করার ঘোষণা জাসদের : রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে বিএনপি-জামায়াতসহ আগুনসন্ত্রাসীদের প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)। গতকাল সরকার পতনের এক দফা কর্মসূচিতে বিএনপি-জামায়াতের নাশকতার ঘটনার পর দলের পক্ষ থেকে দেয়া বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেয়া হয়।

বিবৃতিতে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার বলেন, বিএনপি-জামায়াত ও তাদের রাজনৈতিক অংশীদারদের আসল উদ্দেশ্য নিরপেক্ষ নির্বাচন না, তাদের আসল উদ্দেশ্য আগুনসন্ত্রাস-সহিংসতা-নাশকতা-অন্তর্ঘাতের পথে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করে অস্বাভাবিক-অসাংবিধানিক সরকার আনা। বিএনপি-জামায়াত ও তাদের রাজনৈতিক অংশীদাররা ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকেই স্বাভাবিক সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পথ পরিত্যাগ করেছে।

দেশে-বিদেশের সবার পরামর্শের পরও তারা স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে ফিরে আসেনি। তারা আগুনসন্ত্রাস-সহিংসতা-নাশকতা-অন্তর্ঘাতের সব প্রস্তুতি নিয়েই ২৮ অক্টোবর শান্তিপূর্ণ সমাবেশের ডাক দিয়েছিল। সমাবেশে যোগদানকারী নেতাকর্মীদের সমাবেশের আগের দিন রাতে স্পর্শকাতর কূটনীতিক এলাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসসংলগ্ন মাঠে নেতাকর্মীদের অবস্থান নেয়ার নির্দেশ দেয়ার মধ্য দিয়ে তাদের ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত প্রকাশিত হয়েছিল।

শান্তিপূর্ণ সমাবেশের নামে পুলিশের ওপর হামলা, একজন পুলিশ সদস্যকে হত্যা এবং অসংখ্য পুলিশ সদস্যকে আঘাত করে আহত করা, পুলিশ হাসপাতালে অগ্নিসংযোগ, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে নেতারা বলেন, ২০১৫ সালের মতোই আগুনসন্ত্রাসীদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করেই গণতান্ত্রিক সাংবিধানিক ধারায় দেশকে শান্তি ও উন্নয়নের ধারায় পরিচালিত করা হবে।

রাজনীতির নামে মানুষ হত্যা সহিংসতা : বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনকে সামনে রেখে খোলস ছেড়ে আসল চেহারায় ফিরেছে বিএনপি। এতদিন মুখোশ পরে কর্মসূচি পালন করে আসছিল। ফের লাশের রাজনীতি, ভীতির রাজনীতি শুরু করেছে।

এ ব্যাপারে রাজনৈতিক বিশ্লেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, রাজনীতিতে ভিন্নমত থাকবে, সমালোচনা থাকবে, বিরোধীতা থাকবে কিন্তু রাজনীতির নামে মানুষ হত্যা, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মানুষের ওপর আক্রমণ সরাসরি সহিংসতা। এটি দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র। বিএনপির বিগত দিনের কর্মকাণ্ডে মানুষ আশস্ত ছিল। কিন্ত আজকের (গতকাল) কর্মকাণ্ডে জনগণ শঙ্কিত। জনগণের ওপর বিএনপি আস্থাসংকটে রয়েছে, এটির প্রমাণ দিল তারা। এছাড়া ক্ষমতাসীনরা যে বলে, বিএনপিকে বিশ্বাস করা যায় না, এই প্রমাণও দিয়েছে বিএনপি।

অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, তারা গণমাধ্যমকর্মীদের ওপরও হামলা করেছে। এর মানে সত্যকে গোপন করতে চায়। ’৭৫ এর পর থেকে যেভাবে সত্যকে তারা চাপা দিয়ে আসছে, ঘটনার আলামত নষ্ট করে আসছে, সেরকম আলামত নষ্ট করার জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলা করেছে। সবমিলিয়ে দেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিতে চাচ্ছে।

তবে যতই সহিংসতা করুক বিএনপির সামনে নির্বাচন ছাড়া কোনো পথ খোলা নেই বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ। তিনি বলেন, বিএনপির এই আন্দোলন বেশিদিন টিকবে না। নির্বাচন ছাড়া তাদের কোনো বিকল্প নেই। তাদের আন্দোলনে জনগণ সম্পৃক্ত নেই। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে রক্তপাত ঘটবে- এমনটা ভাবিনি কিন্তু তারা এটি করিয়েছে আজকে হরতাল দেয়ার জন্য। তবে তাদের লক্ষ্য অর্জিত হবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়