রাজপথ দখলে নানা কৌশল আ. লীগের

আগের সংবাদ

শাপলা চত্বরেই জামায়াতের মহাসমাবেশ!

পরের সংবাদ

পুরো ঢাকাকে সমাবেশের নগরীতে পরিণত করার উদ্যোগ

যে কোনো পরিস্থিতিতে মাঠে থাকবে বিএনপি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৮, ২০২৩ , ১২:২৭ পূর্বাহ্ণ আপডেট: অক্টোবর ২৮, ২০২৩ , ১২:২৭ পূর্বাহ্ণ

টানটান উত্তেজনা ও উৎকণ্ঠার মধ্যেই মহাসমাবেশের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। বাধাবিপত্তি এড়িয়ে কাল শনিবার নয়াপল্টনেই সমাবেশ করতে অনড় অবস্থানে দলটি। এরই মধ্যে নিজেদের অবস্থান প্রশাসনকেও জানিয়ে দিয়েছেন দলটির নেতারা। উদ্ভূত যে কোনো পরিস্থিতিতে নেতাকর্মীকে রাজপথে থাকার কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে হাইকমান্ড। সমাবেশে বাধা দিলে বিকল্প প্রস্তুতিও চলছে দলটিতে। কোনো কারণে নয়াপল্টনে অনুমতি না দিলে ওই সময়ে পুরো ঢাকাকে সমাবেশের নগরীতে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছে বিরোধী দল। এমনকি যেখানে বাধা আসবে, সেখানেই প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। এ পরিস্থিতিতে সংঘাতেরও আশঙ্কা করছেন অনেকে।

এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সভা-সমাবেশ সাংবিধানিক অধিকার। এটি কেড়ে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। ২৮ অক্টোবর তাদের সমাবেশ হবে এবং ওই দিন সরকার পতনের পরবর্তী কর্মসূচি দেওয়া হবে। সমাবেশে বাধা দিলে পাল্টা জবাব দেবেন; জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন।

বিএনপি নেতারা জানান, ভেন্যু জটিলতা নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে বিএনপিকে গত বুধবার রাতে চিঠি দেওয়া হয়। এতে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছাড়া সমাবেশের জন্য বিকল্প দুটি জায়গার নাম চায় তারা। চিঠির জবাবে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২৮ অক্টোবরের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ নয়াপল্টনে বিএনপির প্রধান কার্যালয়ের সামনে আয়োজনের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। অন্য কোনো ভেন্যুতে যাওয়া সম্ভব হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বিএনপি নেতারা জানান, যে কোনো পরিস্থিতির জন্য নেতাকর্মীকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। যেখানেই বাধা, সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তোলার নির্দেশনা রয়েছে। তবে কোনোভাবেই নিজে থেকে সংঘাতে না জড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কারণ হিসেবে তারা বলেন, সমাবেশ ঘিরে সরকার ও পুলিশ বাড়াবাড়ি করলে দেশে-বিদেশে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সংকট, জনগণের সাংবিধানিক অধিকার নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। এতে বিএনপির লাভ। সরকার আন্তর্জাতিকভাবে আরও চাপে পড়বে। এই সরকার ও তাদের আজ্ঞাবহ প্রশাসনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নেই, সেটি আরও বেশি প্রতিষ্ঠিত হবে। তবে সহজেই দমে যাবে না দলটি। নয়াপল্টনে মহাসমাবেশে বাধা দেওয়া হলে বিকল্প প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পুরো ঢাকা মহানগরকে সমাবেশের শহরে পরিণত করার সিদ্ধান্ত রয়েছে নেতাকর্মীদের। তবে সবকিছু চূড়ান্ত করা হবে আজ।

বিকল্প প্রস্তুতির বিষয়ে সূত্র জানায়, সরকার ও প্রশাসন মিলে যদি নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে না দেয়, বাধা দেয়, তাহলে ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে একযোগে তারা সমাবেশ করবেন। সেটা ২০ কিংবা তারও অধিক স্থানে হতে পারে। সেসব স্থানে ঢাকা মহানগর বিএনপি ছাড়াও দলের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী এবং সারাদেশ থেকে আসা নেতাকর্মীকে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখানেও বাধা দেওয়া হলে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। এতে ক্ষমতাসীন দল, প্রশাসন আর বিরোধী দলের ত্রিমুখী সংঘাত-সহিংসতার শঙ্কাও করছেন অনেকে। আন্দোলনের চূড়ান্ত মুহূর্তে এসে আর কিছুকে তোয়াক্কা করতে চাইছেন না দলটির নেতাকর্মীরা। শুক্রবারের মধ্যে ভেন্যু জটিলতা নিরসন না হলে এসব বিকল্প প্রস্তুতি নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি না দিলে সরকার বড় ধরনের ভুল করবে। তখন পুরো শহরই সমাবেশের নগরীতে পরিণত হবে। সরকারের নতুন নতুন ফ্রন্ট তৈরিও কোনো কাজে আসবে না। এটি সরকারকে চিন্তা করতে হবে। হাতে সময় কম। পরে দেখবে অক্টোপাসের মতো চারদিকে ঘিরে ফেলেছে।

মহাসমাবেশের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে টানটান উত্তেজনা। নেতাকর্মীও রয়েছেন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে। অনেকেই গত বছরের ১০ ডিসেম্বর বিভাগীয় গণসমাবেশের ভেন্যু নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনার সঙ্গে সাদৃশ্য খুঁজছেন। সেদিনও একই রকম সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। যাতে একজনের মৃত্যুসহ সাড়ে চার শতাধিক নেতাকর্মীকে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে আটক করা হয়; ভাঙচুর করা হয় পুরো কার্যালয়ে।
সূত্র জানায়, ঢাকা মহাসমাবেশে ব্যাপক জনসমাগম ঘটিয়ে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় লোকসমাগম ঘটাতে চান বিএনপি নেতারা। এ জন্য সব আয়োজনই শেষ করেছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়