বেনাপোল বন্দরে প্রতারকচক্র বেপরোয়া
যশোরের বেনাপোলে চেকপোষ্টে আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ছিনতায়কারী চক্র। পাসপোর্টযাত্রীর সাথে প্রতারনা করে সাথে থাকা টাকা লুট করছে। তবে বিভিন্ন ভাবে এদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলেও প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের কারনে বন্ধ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। গতকাল পাসপোর্ট যাত্রীর টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে বেনাপোল চেকপোষ্ট চৌধুরী মার্কেটের গলিতে অবস্থিত শাওন এন্টার প্রাইজ নামে একটি দোকানে তালা ঝুলিয়েছে পোর্টথানা পুলিশ।
এসময় কৌশলে পালিয়ে যায় প্রতিষ্ঠানটির মালিক শাহিন ও হাসান। শাহিন বেনাপোল পৌরসভার বড়আঁচড়া গ্রামের হাসান গাজির ছেলে। তবে শাহিনের জন্মস্থান যশোরের মনিরামপুর উপজেলার কাঠালতলা গ্রামে। অপরদিকে হাসানের বাড়ি বেনাপোল ইউনিয়নের গয়ড়া গ্রাম। এর আগেও প্রতারনার অভিযোগে দুই বার দোকানটিতে তালা ঝুলিয়েছে পুলিশ।
পরে অপরাধ মুলক কাজ করবে না এমন প্রতিশ্রুতি দিলে তালা খুলে দেওয়া হয়েছিল। তবে সে ঘটনার দুই মাস যেতে না যেতে আবারও প্রতারনার ঘটনায় ঘরটিতে তালা মারলো পোর্ট থানা পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, এসব প্রতারক চক্রের বৈধ কোন আয়ের উৎস না থাকলেও কেবল পাসপোর্ট যাত্রীদের সাথে প্রতারনা ও ভ্যাকসিন সনদ জালিয়াতি করে কোটি টাকার সম্পদ গড়েছে । পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শাওন এন্টার প্রাইজে একটি দোকানে কমপিউটার বসিয়ে পাসপোর্টধারীদের ভ্রমনকর কাটার নামে বিভিন্ন ভাবে প্রতারনা করে আসছিল এসব সংঘবদ্ধ চক্র।
মঙ্গলবার ভ্রমন কর কাটার নাম করে দোকানটিতে বসায় তিনজন পাসপোর্টধারীকে। পরে দালাল চক্র যাত্রীর সাথে থাকা টাকার নাম্বার লেখার নাম করে ৬ হাজার টাকা কৌশলে নিয়ে নেয়। পরে যাত্রী তার টাকা হাতে নিয়ে গননা করে দেখে ৬ হাজার টাকা কম। পরে ভুক্তভোগী বিষয়টি পুলিশকে অভিযোগ দিলে পুলিশ অভিযান চালালে কৌশলে পালিয়ে যায় দোকান মালিক শাহিন ও হাসান। পরে ঘরটিতে তালা মেরে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বেনাপোল বন্দরের আর্মড ব্যাটালিয়ন ওসি সঞ্জয় কুমার বলেন, যাত্রীদের নিকট থেকে বহিরাগতদের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ প্রতিদিন পাচ্ছি। আমরা যাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের অনেক টাকা ও উদ্ধার করেছি। বিষয়টি দেশের ভাবমুর্তী চরম ভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে। শক্তিশালি চক্রের সদস্যরা এখন বেপরোয় হয়ে উঠেছে।
বেনাপোল পোর্টথানা পুলিশের উপপরিদর্শক(এসআই) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বৈধ কোন ব্যবসা না থাকলেও অফিসে কমপিউটার বসিয়ে জাল কাগজ পত্র তৈরী করে ও টাকার নাম্বার গননার নাম করে এরা পাসপোর্টধারীদের সাথে প্রতারনা করে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসছিল। এসব প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার সতর্ক করা হলেও মানছিল না। অবশেষে যাত্রীর অভিযোগে ভিত্তিতে শাহিনের দোকানে তালা মারা হয়। প্রতারকদের ধরতে তাদের এ অভিযান চলমান থাকবে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এসময় তিনি আরো জানান,পাসপোর্ট যাত্রীদের হয়রানি করার অভিযোগে ইতোমধ্যে চেকপোষ্ট এলাকার কয়েকটি ঘর তালাবদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া কয়েকজনকে যাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। সুশৃঙ্খল ভাবে যাতে যাত্রীরা ভারত গমন করতে পারে সেরকম সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করতে বেনাপোল চেকপোস্ট,ট্রেন ষ্টেশন ও লোকাল বাসস্ট্যান্ড এলাকায়ও পুলিশের টহল দল রাখা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।