ইসরাইলি গনহত্যার প্রতিবাদে চৌগাছায় প্রতিবাদ সমাবেশ

আগের সংবাদ

ফিলিস্তিনের মসজিদে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল

পরের সংবাদ

শুভ চেতনা সঞ্চারিত হোক সবার মনে

প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০২৩ , ১২:৫৩ অপরাহ্ণ আপডেট: অক্টোবর ২২, ২০২৩ , ১:০২ অপরাহ্ণ

বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হয়েছে। দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে গত শুক্রবার ষষ্ঠীপূজার মাধ্যমে। পূজা শেষ হবে মঙ্গলবার বিজয়া দশমীতে। এবার সারাদেশে ৩২ হাজার ৪০৭টি মন্ডপে দুর্গাপূজা হবে। এ হিসাবে গত বছরের চেয়ে এ বছর ২৪০টি বেশি পূজামন্ডপ হচ্ছে সারাদেশে। দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবই নয়, এটি এখন সার্বজনীন উৎসব। অশুভ শক্তির বিনাশ এবং সত্য ও সুন্দরের আরাধনা শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রধান বৈশিষ্ট্য। অশুভ অসুর শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শুভ দেবশক্তির চূড়ান্ত বিজয়ের দিন হিসেবেই দুর্গাপূজার দশমীর দিনটিকে বলা হয় ‘বিজয়া দশমী’। অসুরকুলের দম্ভ-দৌরাত্ম্য থেকে দেবকুলকে রক্ষায় মাতৃরূপী ও শক্তিরূপী দেবী দুর্গার আগমন। অসুরদের দলপতি মহিষাসুরকে বধ করে দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা দেবকুলকে রক্ষা করেন। অন্যায় ও অশুভকে পরাস্ত করার মাধ্যমে ন্যায় ও শুভবোধের প্রতিষ্ঠা ঘটে। দেবী দুর্গা সত্য, শুভ ও ন্যায়ের পক্ষের সংগ্রামে মর্ত্যরে মানুষকেও সাহসী করে তোলেন। দূর করে দেন যত গøানি, হিংসা-দ্বেষ, মনের দৈন্য ও কলুষ। যাবতীয় মহৎ গুণাবলির প্রতি দেবী দুর্গা মানুষকে আকৃষ্ট করেন। এটি অনুপম স¤প্রীতি চেতনারই বহিঃপ্রকাশ। বর্তমানে এ দেশে দুর্গোৎসব কেবল একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের আচার-অনুষ্ঠান ও আনন্দ-উৎসব উদযাপনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। দেশের মিডিয়াগুলোও এটিকে সার্বজনীন উৎসব গণ্য করে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সাজায়। এটি অনুপম সম্প্রীতি চেতনারই বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু এই সমপ্রীতিও মাঝে মাঝেই অসুরের অবাঞ্ছিত কালো ছায়ায় ঢাকা পড়ে। দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু স দায়ের কিছু মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর শুভবোধসম্পন্ন সব মানুষকেই লজ্জিত, আহত এবং শঙ্কিত করে। তারই প্রেক্ষাপটে সরকার পূজা উপলক্ষে নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করেছে। এর মধ্যেও দেশের কয়েকটি স্থানে মন্দিরে হামলা, মন্ডপ ভাঙচুরের বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এগুলো দুঃখজনক। দোষীদের আইনের আওতায় আনতে না পারা উদ্বেগজনক। ২০২১ সালে হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার সময় যেভাবে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, তাতে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। হামলার শিকার ভুক্তভোগীরা পুনরায় হামলার ভয়ে এবং নিরাপত্তাহীনতার কারণে মামলা করতে ভয় পান। হামলাকারীদের মূল লক্ষ্য, দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলা। দেশের সাধারণ মানুষের জীবনে উন্নতি ঘটেছে; সামাজিক ও ধর্মীয় সমপ্রীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। এসবকেই ধ্বংস করতে চায় মৌলবাদী জনগোষ্ঠী। আসলে মুসলিমদের সঙ্গে হিন্দু ও বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর সামপ্রদায়িক সমপ্রীতি বিনষ্ট করে ফায়দা লুটছে কেউ কেউ। এ ধরনের সাম্প্রদায়িক  বিষবাষ্পকে প্রতিহত না করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের শৈথিল্য এবং বিচারের দীর্ঘসূত্রতার দায় রয়েছে। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে অবিলম্বে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি। হাজার বছরের সামপ্রদায়িক ঐতিহ্যের বাংলায় ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টা নতুন কিছু নয়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখতে সুযোগসন্ধানীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে সবাইকে। সবাই মিলে এই উৎসব পালনের মধ্য দিয়েই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং পারস্পরিক সৌহার্দের বন্ধন আরো দৃঢ় করতে হবে- সেই প্রত্যাশায় রইলাম। সবাইকে শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভেচ্ছা।

আইর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়