যশোরের মণিরামপুরে খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুত করার কাজে ব্যস্ত গাছিরা। শীতের আগমন বার্তা ঋতু বৈচিত্রে এখন রাতের শেষে কুয়াশা জানান দিচ্ছে। আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস সংগ্রহে মনিরামপুর উপজেলার মাঠে মাঠে খেজুর রস সংগ্রহের জন্য গাছিরা খেজুর গাছ প্রস্তুত কাজে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
অল্পকদিনের মধ্যে পূবালি বাতাসে চির সবুজের বুকচিরা অপরুপ সৌন্দর্যে সকলের মন মাতিয়ে তুলবে মিষ্টি খেজুর রস ও গুড়ের। কাক ডাকা ভোরে থেকে চলবে রস সংগ্রহ। সন্ধ্যায় চলবে গাছ পরিচর্যার কাজ। চলতি মৌসুমে কিছুটা আগেই উপজেলার প্রান্তিক গাছিরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ জনপদেও গ্রামে গ্রামে সকালের শিশিরের সাথে অনুভুত হচ্ছে শীত।
আর মাত্র কয়েক দিন পর রস সংগ্রহ করে রস থেকে গুড় ও পাটালি তৈরি শুরু হবে। চলবে প্রায় ফালগুন মাস পর্যন্ত। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের প্রস্তুতিত উপজলার প্রতিটি গ্রামে চোখে পড়ছে। খেজুর রস ও গুড়ের জন্য মনিরামপুরের সুনাম/খ্যাতি রয়েছে দেশ জুড়ে। সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ ও গাছি। একদশক আগেও বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ পতিত জমিতে, ক্ষেতের আইলে, ঝোপ-ঝাড়ের পাশে ও রাস্তার দুই ধার দিয়ে ছিল অসংখ্য খেজুর গাছ।
এক সময় সন্ধ্যাকালীন সময়ে গ্রামীন পরিবেশটা খেজুর রসে মধুর হয়ে উঠতো। রস আহরণকারী গাছিদের প্রাণচাঞ্চল্য ছিলো চোখে পড়ার মত। ভোর থেকে শুর করে সারা বেলা যেন গাছিরা মেতে থাকতো রস জ্বালিয়ে পাতলা ঝোলা, দানা গুড় ও পাটালী তৈরির কাজে। যত বেশি শীত পড়বে তত বেশি মিষ্টি রস দেবে খেজুর গাছ।
উপজেলার রোহিতা ইউনিয়নের সরষকাঠি গ্রামের গাছি মোঃ জামাল উদ্দীন বলেন, শীতের পুরো মৌসুমে চলে রস, গুড়, পিঠা, পুলি ও পায়েস খাওয়ার মহা উৎসবা। শহরে থেকে সকলে গ্রামের বাড়ীতে আসে রস-গুড় খেতে। তবে নতুন করে কেউ আর খেজুর গাছ তোলা-কাটার কাজ করতে চাচ্ছে না। একটি খেজুর গাছ ১৫থেকে ২০ বছর পর্যন্ত রস দেয়।
তবে খেজুর গাছ আমাদের অর্থনীতি, সংস্কৃতি, সাহিত্য তথা জীবনধারায় মিশে আছে। এছাড়া খেজুরর পাতা জ্বালানি কাজেও ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকে। কিন্তু জয়বায়ু পরিবর্তন, কালের বির্বতনে বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ এখন উপজেলা জুড়ে প্রায় বিলুপ্তির পথে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।