অতিরিক্ত চা খাওয়া আর নয়

আগের সংবাদ

যুদ্ধবিরতির খবর অস্বীকার করল হামাস

পরের সংবাদ

শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষায় ব্যবস্থা নিন

আইর/

রূপান্তর প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২৩ , ৬:৫৫ অপরাহ্ণ আপডেট: অক্টোবর ১৬, ২০২৩ , ৬:৫৬ অপরাহ্ণ

শ্রমিক শ্রেণি দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যারা শুধু উৎপাদনব্যবস্থারই প্রধান শক্তি নয়, দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনেরও অন্যতম কারিগর। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশে এখনো শ্রমিকদের নানামুখী বঞ্চনার শিকার হতে হচ্ছে। দেশের মোট শ্রমশক্তির একটি বড় অংশ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে যুক্ত। মানবসভ্যতার চাকা এগিয়েছে শ্রমদানকারী শক্তির শ্রম, ঘাম আর রক্তের ওপর দিয়ে। এই প্রেক্ষাপটে একজন শ্রমিক অবশ্যই মূল্যায়িত হবেন তাঁর অবস্থান থেকেই।

শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষাসহ পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব কার? শ্রমিক বাঁচলে কারখানা বাঁচবে। কর্মপরিবেশের উন্নয়ন করে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনা, শ্রমিক ছাঁটাই না করা, শ্রমিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ করা—এগুলো শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষার মধ্যেই পড়ে। গত শনিবার ‘শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা, বাংলাদেশের শ্রম খাতের সুষম উন্নয়ন’ বিষয়ক গোলটেবিল আলোচনায় আলোচকরা বলেছেন, মৃত্যু, দুর্ঘটনার বাইরে আমাদের শ্রমিকরা পেশাগত কারণে অসুস্থ হচ্ছেন।

এ ক্ষেত্রে কিন্তু আমরা তাঁদের সুরক্ষা দিতে পারছি না। পোশাক, পাটের মতো খাতে শ্রমিকদের প্রধান স্বাস্থ্য সমস্যা হলো শ্বাসকষ্টজনিত রোগ। এটি শ্রমিকদের কর্মক্ষমতা, জীবনীশক্তি কমিয়ে আনে। সামাজিক সুরক্ষা বলতে আমরা বুঝি, একটি দেশের সব মানুষের সুরক্ষার বিষয়টি।

এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শ্রমিকের সুরক্ষা। আমাদের শ্রম আইনে শ্রমিকের সুরক্ষার বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া আছে। তবে শুধু আইন থাকলেই হয় না, এর বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন সবার সমন্বিত উদ্যোগ, সবার অংশগ্রহণ। ৪৩টি সেক্টরে নিম্নতম মজুরি পাঁচ বছর থাকবে। প্রতি পাঁচ বছর পর মজুরি পুনর্র্নিধারণ করার কথা, কিন্তু সেটা কি হচ্ছে? গার্মেন্টস শ্রমিকরা এখন ৩৫ বছর হলেই চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে থাকছেন। এ কারণ তাঁদের উৎপাদনশীলতা কমছে।

শিল্প-কারখানার অগ্নিকান্ডে শ্রমিকজীবনই বেশি আক্রান্ত হয় আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা সে সাক্ষ্যই বহন করছে। সম্পদহানির বিষয়টি তো জীবনহানির চেয়ে অবশ্যই গৌণ। দরিদ্র পরিবারে কর্মক্ষম ব্যক্তির আকস্মিক মৃত্যু বা পঙ্গুত্বের ঘটনা যে কী, তা কেবল ভুক্তভোগীরাই জানেন। কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য যে সহায়তা ঘোষণা করে, তাতে তাঁদের সহানুভ‚তির বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে বটে, কিন্তু জীবনহানি কিংবা পঙ্গুত্বের মতো ঘটনা কোনো কিছু দিয়েই পূরণ করা সম্ভব নয়। বেশির ভাগ শিল্প-কারখানার কর্মপরিবেশ অনুক‚ল নয়।

শ্রমিকদের শতকরা ৮৮ ভাগ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করে। তাদের সুরক্ষার আওতায় আনা বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের অনেক ভালো আইন আছে, কিন্তু বাস্তবে প্রয়োগ খুব কম।

বৈষম্য হ্রাস করে শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের অধিকার রক্ষার বিষয়ে সরকারসহ সব সামাজিক শক্তিকে দৃঢ় অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে। আর্থ-সামাজিক মুক্তির পথ ত্বরান্বিত করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়