‘ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক থাকা আমাদের জন্য ভালো’ বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। একই সঙ্গে তিনি বলেন, সম্পর্ক ভালো বলে আমরা ভারতের সহযোগিতায় ক্ষমতায় থাকবো, এরকম উদ্ভট ও আজব চিন্তা আমাদের মাথায় আসেনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দিল্লি আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। একাত্তর থেকে এ সম্পর্ক আমাদের আছে। স্ট্র্যাটেজিক পলিসিতে দিল্লিরও আমাদের দরকার, আমাদেরও দিল্লিকে দরকার। মাঝখানে ২১ বছর সম্পর্কের অবনতি আমাদের কারো জন্য ভালো হয়নি। বিশেষ করে ভারত অনেক বড় দেশ। তাদের ক্ষতি এতটা নেই যতটা ক্ষতি আমাদের হয়েছে। আমাদের সঙ্গে তাদের ভালো সম্পর্ক থাকলে আমাদেরও অনেক কিছু ভালো হতো। যেমন ধরুন, এখন বহুগুণ বেড়ে গেছে বাংলাদেশ-ভারতের বাণিজ্য।
বাংলাদেশের তিন দিক থেকে বিস্তৃত ভারত- এমন তথ্য উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকা এটি আমাদের দেশের জন্য ভালো। তবে এ নয় যে, আমি অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করব। একটি দিক হচ্ছে যে ভারতের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক থাকলে আমরা কতটা লাভবান হই এটি কিন্তু গত কয়েক বছরে পরিষ্কার হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ভারতে সঙ্গে সম্পর্ক ভালো বলে আমরা অন্যদের বৈরী করবো তাও না। বৈরী করলে যেমন আজকে আমরা পরমাণু ক্লাবের সদস্য হওয়ার গৌরব অর্জন করছি। এখানে তো রাশিয়ার সহযোগিতায়। তারপরে ২৩ অক্টোবর আমাদের মেট্রোরেল আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এটিও জাপানের সহযোগিতায় এবং তাদের এখানে আর্থিক সহযোগিতাও আছে। তারপরে চট্টগ্রামে আমাদের আরেকটি মেগা প্রজেক্ট নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব টানেল, এখানেও চীনের সহযোগিতা এবং সাহায্য আছে। কাজেই আমাদের নীতিই হলো সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেবরা আগ বাড়িয়ে অনেক কথা বলেন। সেটির সঙ্গে আমাদের যে উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য তার কোনো মিল নেই। আপনারাই বলুন, বাংলাদেশের সত্যের জন্য যেটি বলতে হয় ভারত কখন আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করেছে? কোনো নির্বাচনে? তাহলে এখানে আমরা ভারতের সহযোগিতায় ক্ষমতায় থাকবো, এরকম উদ্ভট চিন্তা, আজব চিন্তা আমাদের মাথায় আসেনি। আমরা বুঝি সম্পর্ক ভালো হলে অনেক দিক থেকেই ভালো।
চীনের সঙ্গে কি দূরত্ব বজায় রাখবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে তো দূরত্ব নেই। আমাদের অবকাঠামো ক্ষেত্রে চীনের একটি ভ‚মিকা আছে। সেটিকে তো আমরা বাইপাস করতে পারবো না। তাদের সাহায্য আমরা নিচ্ছি। বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন হবে এটি তো জি টু জি প্রকল্প। তাদের সরকারের একটি বিরাট ভূমিকা রয়েছে। আমরা কারো সঙ্গে শত্রুতা চাই না। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, এটিই আমাদের নীতি। ফখরুল সাহেবরা যে অর্থে বলেন সেই অর্থে আমরা চিন্তা করি না। আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক আরও ভালো হওয়ার অর্থ এই নয় যে তারা আমাদের নির্বাচনে এসে হস্তক্ষেপ করবে। আমাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে, এমন উদ্ভট চিন্তা আমরা করিনি। আমাদের ক্ষমতায় বসাতে পারে আমাদের দেশের জনগণ, কোনো দেশ বা অন্য কোনো বন্ধু নয়। বিদেশে বন্ধু আছে, প্রভু নেই।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।