আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর মোট ২২ দিন বাংলাদেশের জলসীমায় ইলিশ মাছ সহ সব মাছ ধরা, পরিবহন বা সংরক্ষণ সহ সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে মৎস অধিদফতর। এছাড়াও ১৯ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকে। কয়েক বছর ধরে এভাবেই চলে আসছে। আর এই নিষেধাজ্ঞা ভারতের জলসীমায় প্রতি বছর ১ বার ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন মোট ৬১ দিন।
মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য একটাই। যাতে মা ইলিশ ডিম ছাড়তে পারে, ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। কিন্তু বাংলাদেশ আর ভারতের মাছ ধরা নিষিদ্ধের সময় একই না হওয়ায় আমাদের দেশের জেলেরা যখন বাড়িতে বসে থাকে ঠিক সেইসময় ভারতীয় জেলেরা মাছ ধরায় ব্যস্ত থাকে। এছাড়াও অভিযোগ আছে ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে মাছ ধরে নিয়ে যায়। যার প্রমাণ আমরা বিভিন্ন মাধ্যমের খবরে দেখেছি।
ভারতীয় জেলেদের বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশের খবর যদি মিথ্যাও হয় তবুও আরেকটি কথা থেকে যায়। ভারত-বাংলাদেশের জলসীমা একই। মাছ তো আর জলসীমা বোঝেনা। দু-দেশের জলসীমার মধ্যে কাঁটাতারের বেড়াও নেই যে মাছ এদেশ থেকে ওদেশে যেতে পারবেনা। মাছ তার নিজস্ব গতিতে চলাচল করে। তাদের পাসপোর্ট ভিসারও প্রয়োজন নেই। ফলে আমাদের দেশে যখন জেলেরা মাছ না মেরে সরকারি নির্দেশ মেনে বাড়িতে বসে থাকছে ঠিক সেইসময় ভারতীয় জেলেরা মাছ ধরার অবাধ সুযোগ পাচ্ছে।
দেশের বাজারে ইলিশের যে দাম তাতে মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষ দাম জিজ্ঞেস করতেও ভয় পায়। ইলিশ এখন শুধু বড়লোকের উচ্চ বিলাসী পণ্যে পরিণত হয়েছে। অথচ প্রতিবছর মৎস অধিদফতর থেকে বলা হয় ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে।
জানিনা তাদের তথ্য কতটা সঠিক তবে বাজারে এখন পর্যাপ্ত মাছ দেখতে পাওয়া যায়না এটা সঠিক। এর অন্যতম একটা কারণ হলো ভারত-বাংলাদেশ দুদেশে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময়ের পার্থক্য। সময় এসেছে সময় নির্ধারণের সময় নিয়ে ভাববার। যত দ্রুত এই বিষয়টি মিমাংসা করা যাবে ততই দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে। নয়তো সেদিন আর খুব বেশি দুরে নয় যেদিন জাতীয় মাছের তকমা ইলিশকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো সহজলভ্য মাছকে দিতে হবে।
লেখক- শিক্ষক, সাংবাদিক এবং সমাজকর্মী।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।