কেশবপুরে বছরের পর বছর ধরে অধ্যক্ষের পদ খালি রয়েছে। কোনোটির অধ্যক্ষ নেই এক যুগ হতে চলেছে। আবার কোনটিতে অধ্যক্ষ নেই মাসের পর মাস, বছরের পর বছর।
এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশ বিবিঘ্নি হচ্ছে বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। একাধিক অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ না থাকলে প্রতিষ্ঠান সুঠু ভাবে চলে না। তাই দ্রুত অধ্যক্ষ নিয়োগ হওয়া প্রয়োজন বলে তাদেও দাবি।
জানা গেছে কেশবপুর উপজেলায় ১১টি কলেজ আছে। এর মধ্যে ৬টি কলেজ চলছে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে। অধ্যক্ষ না থাকায় কলেজ পরিচালনায় নানা রকম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে চলছে কেশবপুর সরকারি ডিগ্রী কলেজ, কেশবপুরের হাজী মোতালেব মহিলা কলেজ, সাগরদাঁড়ি আবু শারাফ সাদেক কারিগরি বাণিজ্য মহাবিদ্যালয়, আইডিয়াল কলেজ,শহীদ ফ্লাইট লেঃমাসুদ মেমোরিয়াল কলেজ ,বুড়িহাটি মুক্তিযোদ্ধা কলেজ।
পৌর শহরের হাজী আব্দুল মোতালেব মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ জুলফিখার আলী ২০১৪ সালে অবসরে যাওয়ার পরে এখানে কোনো অধ্যক্ষ নিয়োগ হয়নি। এরপর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে উপাধ্যক্ষ মজ্ঞু রানী বিশ্বাস দায়িত্ব পাালন করছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রায় নয় বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে।
হাজী আব্দুল মোতালেব মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে মজ্ঞু রানী বিশ্বাস বলেন অধ্যক্ষ পদে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে একাধিক বার। আবেদন না করায় নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়নি।
সাগরদাঁড়ি আবু শারাফ সাদেক কারিগরি বাণিজ্য মহাবিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে অধ্যক্ষ চ ল কুমার বিশ্বাস দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০১২ সালের সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার পরে এ প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার অপারেশনের শিক্ষক শ্যামল কুমার ঘোষ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
১১ বছর ধরে এ প্রতিষ্ঠান চলছে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে।এ কারণে এখানে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ অভিভাবকদের। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শ্যামল কুমার ঘোষ বলেন মাঝে খানে তো কমিটি ছিল না কেস কাস চলছিলো।এখন আগারছি কি ভাবে নিয়োগ দেওয়া যায়।
কেশবপুর সরকারি ডিগ্রী কলেজজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এটিএম বদরুজ্জামান বদলী হয়ে চলে যাওয়াই সেপ্টেম্বর মাস হতে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব পান শওকত আরা আমিন। বুড়িহাটিতে মুক্তিযোদ্ধা কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে চলছে কার্যক্রম।
হিজলডাঙ্গায় অবস্থিত শহীদ ফ্লাইট লেঃমাসুদ মেমোরিয়াল কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা কালীন অধ্যক্ষ মশিযার রহমান ২০২২ সালের জুন মাসে অবসরে যান । এরপর থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব পান ওবায়দুল রহমান।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওবায়দুল রহমান বলেন অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে আমরা প্রক্রিয়াই আছি এবং পত্রিকায় অধ্যক্ষ পদে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে।
কোমরপোলে অবস্থিত আইডিয়াল কলেজটিতে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন নন্দী শংকর কুমার। তিনি ২০১১ সালে উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়ার জন্য এক বছরের জন্য ছুটি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় যান। এরপর তিনি আর কর্মস্থালে ফিরে আসেননি।
এরপর থেকে প্রতিষ্ঠানটি ১২ বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে চলছে। বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দায়িত্ব পালন করছেন পবিত্র বিশ্বাস।
আইডিয়াল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পবিত্র বিশ্বাস বলেন আগে অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু আমরা বিফলে আছি।তবে আমরা স্থায়ী ভাবে পিন্সিপাল নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।