প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৩ , ১:৫১ পূর্বাহ্ণ আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৩ , ১:৫৭ পূর্বাহ্ণ
বিশ্বয়ানের এই যুগে নিজের দেশকে স্বতন্ত্র ভাবে পরিচালনা করা খুবই চ্যালেঞ্জিং।দেশপ্রেমিক হলে অনেক সমস্যার সমাধান করা সহজ হয়।দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বমুখী যা একক ভাবে বাংলাদেশ দায়ী নয়, তারপরও সাধারন মানুষ যথেষ্ট কষ্টে জীবনের চাহিদা মোকাবেলা করছে। এমন পরিস্হিতি মোকাবেলায় যখন প্রয়োজন ছিল জাতীয় ঐক্য তখন একদল ভাবলো এইতো সুযোগ।কিন্তু তাঁরা জানে কি? জাগরণের আঁচ সৃষ্টি হয় জনগণের সচেতন ও স্বতঃস্ফূর্ততার সম্মিলনে।গণবিস্ফোরণের আঁচ যখন সৃষ্টি হয় তখন জনগণকে রাস্তায় নামানোর জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয় না। জনগণই নেতাকে সামনে নিয়ে আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়। আর আন্দোলনকারী দল আর তাঁর নেতা হয়ে ওঠে ইতিহাসের নায়ক।
বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগের আগে কেন বলেননি সংসদ অবৈধ।বিএনপি এখন বলছে বর্তমানের আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধ।বললেই তো আর তা হয়ে যায় না। বর্তমান সংসদ সাংবিধানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত। এই সংসদে বিগত ১০ ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত বিএনপির সংসদ সদস্যরা ছিলেন। বক্তব্যও দিয়েছেন। বেতন-ভাতাসহ সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছেন। নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করেছেন, এটা পাগল, শিশু, অন্ধ ও মতলববাজরা ছাড়া সবাই বুঝতে পারবেন।এখন যদি বিএনপি নেতাদের প্রশ্ন করা যায়, বিএনপি পদত্যাগ করা এমপিরা কি অবৈধ ছিল? সংসদ সদস্য হিসেবে অর্জিত অর্থ ও সুযোগ-সুবিধা গ্রহণও কি অবৈধ? এসব প্রশ্নের উত্তর বিএনপি নেতারা দিতে পারবেন কি? পদত্যাগের সময় বিএনপির এমপিরা কিন্তু অবৈধ শব্দটি উচ্চারণ করেননি। পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে রুমিন ফারহানা এমপি বলেছিলেন, ‘সংসদে আমরা জনগণের পক্ষে কথা বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বারবার আমাদের মাইক বন্ধ করে দিয়েছিল। এই সংসদে থাকা আর না-থাকা সমান।’
জন্মলগ্ন থেকে জনগণকে বিভ্রান্ত করে ঘোলা পানিতে মাছ মারতে তৎপর বিএনপি। এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক কারণ পঁচাত্তরের হত্যা-ক্যুয়ের ধারাবাহিকতায় বিএনপির জন্ম হয়েছে প্রত্যক্ষ সামরিক শাসনের গর্ভে আর কলেবর বৃদ্ধি করেছে সুযোগসন্ধানী-সুবিধাবাদী-উচ্চাকাঙ্ক্ষীদের একত্র করে পরোক্ষ সামরিক শাসনের মধ্যে।বিএনপির জন্মদাতা প্রেসিডেন্ট জিয়া মুখে ‘বহুদলীয় গণতন্ত্রের’ কথা বলেছেন আর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রথম ধাপেই উপহার দিয়েছেন মার্শাল ল’র মধ্যে ‘হ্যাঁ-না’ ভোট। যাতে ২ শতাংশ ভোট না পড়লেও দেখানো হয় উপস্থিতির হার ৮৮.১০ শতাংশ, আর জিয়া ‘হ্যাঁ’ ভোট পান ৯৮.৯০ শতাংশ। ব্রিটেনের সুবিখ্যাত ‘দ্য গার্ডিয়ান’ প্রচার করেছিল, কোথাও কোথাও ভোট পড়েছে ১১০-১২০ শতাংশ।জিয়ার উল্লিখিত ‘হুকুমের নির্বাচন’ দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ভোটব্যবস্থা সর্বতোভাবে কলঙ্কিত হয়।
জিয়া-সাত্তার প্রথমবার এবং খালেদা জিয়ার দুবারের শাসনামলের নির্বাচনগুলোর দিকে তাকালে এটা সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে- কীভাবে দেশের ভোটব্যবস্থাকে কলঙ্কিত করতে বিএনপি দলটি ভূমিকা রেখেছে। ভোট কলঙ্কের হোতা বলেই বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার পর প্রতিবারই সাংবিধানিক শাসনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। কেবল ব্যর্থই নয়, প্রতিবারই ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে বেঁচেছে।সাত্তার না-কি ছিলেন নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি! যদি তাই হন, তবে নত মস্তকে সেনাপ্রধান এরশাদের কাছে ক্ষমতা দিয়ে বঙ্গভবন থেকে বের হয়ে এসেছিলেন কেন? ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনের পর খালেদা জিয়া ক্ষমতা ছেড়েছিলেন কেন? ওটাও তো পালানো! আর পুতুল রাষ্ট্রপতি ড.ইয়াজউদ্দিন ও পালিয়ে বেঁচেছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তিনবারের ঘটনাপ্রবাহ প্রমাণ করে বিএনপির কাছে সংবিধান, গণতন্ত্র ও ভোটব্যবস্থা নিরাপদ নয়।বিএনপি আসলে সাংবিধানিক শাসনের ধারাবাহিকতা সুরক্ষা করার ব্যাপারে ‘ডিফল্টার’। আইনি প্রবাদ বলে, একজন ডিফল্টার সব সময়ই ডিফল্টার। বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়া মানে সংবিধান ‘বাঘের কাছে ছাগল বর্গা’ দেওয়া প্রবাদেরই নামান্তর।
বাংলাদেশকে পঁচাত্তরের পর বাংলাদেশ হিসাবে আর গঠন হতে দেওয়া হয়নি। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের সাথে বেইমানী করে ধীরে ধীরে এক ধরনের সাম্প্রদায়িক লুটেরা রাষ্ট্রে পরিনত বাংলাদেশ। বিশ্বায়নের এই যুগে এধরনের সমাজ রাষ্ট্র গঠনের যথেষ্ট উপসর্গ বিদ্যমান। সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প এতটাই জীবন্ত সাম্প্রতিক কালে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি জমিতে শুধু বীজ ছিটিয়ে দিয়েই বিনিয়োগ ছাড়াই বিনাপরিশ্রমে ফষল ঘরে তুলছে। এ রকম পরিস্হিতি মোকাবেলা করে নৌকা সারা জীবন উজান ঠেলেই এগিয়েছে।বাংলার আকাশে বাতাসে ষড়যন্ত্রের তীব্রতা -অন্ধকারাচ্ছন্ন বাংলার আকাশ তৈরীর ক্ষেত্র প্রস্তুত……………
“তাকদুম তাকদুম বাজায় আমেরিকা রে
তাকদুম তাকদুম বাজায় গণতন্ত্রের ঢোল রে
তাকদুম তাকদুম বাজায় রে।
বিশ্বব্যাপি গণতন্ত্রের হোল সেলর আমেরিকা রে
তাকদুম তাকদুম বাজায় গণতন্ত্রের ঢোল রে
আমেরিকার সিনেটর- বব মেনেনডেজ ঘুষ নিয়েছে রে
আর বাংলাদেশের র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা রে
তাইতো বলে-আমেরিকার অ্যাটর্নির কার্যালয় থেকে রে।
মোড়লের মোড়লি পনায় কি দশা ইমরানের রে
দেশে দেশে গণতন্ত্র ধ্বংস হয় রে
উত্থান হয় অগণতন্ত্রিদের রে
মোড়লের চাটুকার বসে গদিতে রে
সুর বাজায় অবাধ গণতান্ত্রিক মানবতার মূল্যবোধের রে।
গণতন্ত্রের হোল সেলর- আমেরিকা রে
তাকদুম তাকদুম বাজায় গণতন্ত্রের ঢোল রে
দেশে দেশে সার্বভৌমত্ব তালুবন্দী রে
বৃদ্ধাআঙ্গুল দেখায় আন্তজাতিক আইন রে।
সব ভুলে যাই, ভুলি না ৭১ এর ভূমিকা রে
ভুলি না বাংলা মায়ের কোল রে
বাংলা জনম দিলা রে
তোমার পরান আমার পরান এক নাড়িতে বাঁধা রে
বাঁধন ছেঁড়ার সাধ্য কারো নাই রে
বাজে ঢোল নরম গরম তালে রে
বাংলাদেশের ঢোলের বোলে ছন্দপতন নাই রে
তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল রে।।”
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের অর্জন সামান্য নয়,আমাদের গড় আয় ও আয়ু দুই-ই বেড়েছে,বিনা মূল্যে বই প্রদান,প্রতি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয়- মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করছে,শিক্ষার হার ৭৫.২ শতাংশে উন্নীত করেছে,‘পাবত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি’ সম্পন্ন করে পার্বত্য অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করে,গঙ্গাচুক্তির মাধ্যমে গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করে,মিয়ানমার ও ভারতের সাথে সমুদ্রসীমা চুক্তি সম্পাদন করে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করে,ভারতের সাথে সীমান্তচুক্তি বাস্তবায়ন করে এবং ছিটমহল সমস্যার সমাধান করে,দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে, দেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়, বিদ্যুৎ উৎপাদন ২১ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করে, মাথাপ্রতি আয় ২ হাজার ৮০০ ডলারে উন্নীত করে, দারিদ্র্যসীমা ১৮.৭ শতাংশে নামিয়ে এনেছে,যমুনা নদীতে বঙ্গবন্ধু সেতু ও রেলসেতু নির্মাণ করে,মহাকাশে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে,রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে,বাংলাদেশের নিজস্ব আয়ে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম পদ্মা সেতু ও রেলসেতু নির্মাণ করেছে, কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণ করেছে,পায়রা সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করেছে। একইসঙ্গে নির্মাণ করছে গভীর সমুদ্রবন্দর,রাজধানী ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ করেছে,নির্মাণ করেছে দীর্ঘ উড়াল সড়ক,নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী শিক্ষার হার ৭২.৮২ শতাংশে উন্নীত করেছে,তৈরি করেছে ডিজিটাল বাংলাদেশ,নির্মাণ করছে স্মার্ট বাংলাদেশ,বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করেছে,যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছে,মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা, দুস্থ ভাতা, গৃহায়নের মাধ্যমে ভূমিহীনদের জন্য ঘরবাড়ি নির্মাণ, সর্বজনীন পেনশনের উদ্যোগ গ্রহণ প্রভৃতি বহুমুখী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলছে। এ তালিকা আরও দীর্ঘ করা যায়। মাত্র কয়েকটি সাফল্যের নজির তুলে ধরে বলতে চাই- একমাত্র শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ নির্মাণের চ্যাম্পিয়ন। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে, উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে এবং সুখী সুন্দর নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী করুন।জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিনে আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য সবাইকে প্রস্তুত করার শপথই জন্মদিনের সবচেয়ে বড় উপহার।।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু,বাংলাদেশ চিরজীবি হোক।।
লেখক: কাজী বর্ণ উত্তম
সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক,
যশোর জেলা আওয়ামী লীগ।
সহ সভাপতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ,যশোর।
সহ সভাপতি, উদীচী,যশোর।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।