যশোরে জামায়াত নেতার খাদ্য-বস্ত্র বিতরনে আ. লীগ নেতা বিশেষ অতিথি!

আগের সংবাদ

ঝিকরগাছায় মাদকাসক্ত ছেলে হত্যার হুমকি দিয়েছে পিতামাতাকে!

পরের সংবাদ

চৌগাছাতে নিয়োগ বানিজ্যে ফোন আলাপ ফাঁস, এলাকায় তোলপাড়

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৩ , ৯:১১ অপরাহ্ণ আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৩ , ৯:১১ অপরাহ্ণ

যশোরের চৌগাছার জগদীশপুর-মির্জাপুর ইসমাইল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৫টি শুন্য পদে নিয়োগে ৫০ লাখ টাকার অর্থ বানিজ্য করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি বিদ্যালয়ের সভাপতি, প্রধান শিক্ষকসহ ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা বৈঠক করে এই সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন বলে জানাগেছে। এদিকে নিয়োগ বানিজ্যের বিষয়ে ফোন কল ফাঁস হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় চলছে। দুর্নীতি ঠেকাতে ইতোমধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরিদর্শক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসী।

সূত্র জানিয়েছে, জগদীশপুর-মির্জাপুর ইসমাইল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একজন প্রধান শিক্ষক, ল্যাব অপারেটর, অফিস সহায়ক, আয়া ও একজন পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর অফিস সহায়ক পদে ১২ জনসহ মোট ২৫/৩০ জন চাকরি প্রত্যাশিরা আবেদন করেন।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে কয়েকজন জানান, নিয়োগের বিষয়টি চুড়ান্ত করার লক্ষে সম্প্রতি বিদ্যালয়ের সভাপতি আমির হামজা রয়েল, প্রধান শিক্ষক তবিবর রহমান, বিদ্যুৎসাহী সদস্য তারিকুল ইসলাম সাবু এক বৈঠকে মিলিন হন। সেখানে ৫ জন চাকুরী প্রত্যাশীদের নিকট থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, ইতোমধ্যে ৫ জনকে মনোনীত করা হয়েছে। এরমধ্যে অফিস সহায়ক পদে জগদীশপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেন ও ল্যাব অপারেটর পদে একই গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমকে মনোনীত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রত্যেক প্রার্থীর নিকট থেকে সব টাকায় আদায় করা হয়েছে বলে ফোন কলের মাধ্যমে তথ্য তথ্য মিলেছে।

এদিকে নিয়োগ বানিজ্য নিয়ে সম্প্রতি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তবিবর রহমান ও প্রার্থী আলামিনের কয়েকটি ফোন কল ফাঁস হয়। ফোন কলে উভয়ের কথোপকথনে টাকা আদায় করা হয়েছে তা জানাগেছে। ফোন কলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রার্থী আলামীনকে দেখা করার বিষয়টি বলেন। সেখানে আলামিন জানান, ‘‘স্যার আপনার সাথে আজকালের মধ্যে দেখা করব। আপনাকে কিছু টাকা দেবানে স্যার’’।

এছাড়া আরও বলেন, ‘‘স্যার সভাপতির কাছে ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়েছি। পুরোপুরি চাচ্ছে। ফোন কলের কথোপকথনে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আরো বলেন, সবার কাছ থেকে টাকা কুড়োনো (নেয়া) শেষ। প্রার্থী বলেন, আমারটা বেঁধে ছিল। তাওতো ঠিক করে দিলাম। দুটি ফোন কলে প্রায় ৮ মিনিট কথাবার্তা হয়। সেখানে অর্থ বানিজ্যের বিষয়টি স্পষ্ট উঠে আসে। এই ফোন কল ফাঁস হবার প্রেক্ষিতে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। অর্থবানিজ্যের এমন ঘটনায় বিদ্যালয়সহ এলাকাবাসির মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তবিবর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘নিয়োগের বিষয়ে কোন লেনদেন হয়নি। ফোন কলের বিষয়ে বলেন, অনেক লোকের সাথে আমার কথা হয়। আর আলামিনতো আমার ছাত্র। তার সাথে কি বা কথা বলতে পারি ’’

ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমির হামজা রয়েলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘নিয়োগের বিষয়ে কোন বৈঠক হয়নি এমনকি কোনো লেনদেন হয়নি। যারা অভিযোগ দিয়েছে তারা মিথ্যে অভিযোগ দিয়েছে। ফোন কলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার সামনে এনে বলেন টাকা নেয়া হয়েছে কিনা। কলের বিষয় আমি কিছু জানিনা।’’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবুল কালাম রফিকুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘টাকাপয়সার লেনদেন ওপেন সিক্রেট, এটাতো সকলে জানে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত হয়েছে। টাকার লেনদেনের বিষয়টি কেউ স্বীকার করেনা। তারপরও আমি মনে করি কোন নিয়োগে টাকা নেয়া উচিৎ না। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি। তিনি বলেন নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ এখনো চুড়ান্ত হয়নি।’’

জেআ

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়