খাবারের লোভ দেখিয়ে বৃদ্ধ বাবা- মায়ের কাছ থেকে জমি লিখে নিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে দুই ছেলে। ঘটনাটি ঘটেছে গত সপ্তাহখানেক আগে যশোরের কেশবপুর উপজেলার গৌরীঘোনা ইউনিয়নের বুড়-লী গ্রামে। রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ওই গ্রামের বৃদ্ধ বারিক গাজী (৮৪) ও বৃদ্ধা শহর বানু (৭৮) সুষ্ঠু বিচারের আশায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বরণাপন্ন হন। চলাফেরা করতে অক্ষম হওয়ায় চার মেয়ে ভ্যানে করে নিয়ে আসেন তাদের। এ ব্যাপারে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে বোনেরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগও করেছেন।
বৃদ্ধ বারিক গাজীর মেঝো মেয়ে কোহিনুর বেগম বলেন, সপ্তাহ খানেক আগে ভাইয়েরা তাড়িয়ে দেওয়ায় বৃদ্ধ বাবা ও মা আমাদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। আমরা চার বোন বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে এর সুষ্ঠু বিচার ও ভাইয়েরা যাতে ভরণ-পোষণ দেয় তার দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছি।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মোস্তাফিজুর রহমান কাজল বলেন, ওই বৃদ্ধ-বৃদ্ধার দুই ছেলে ও পাঁচ মেয়ে। ছোট ছেলে সাঈদ গাজী খাওয়া-দাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বাবা বারিক গাজীর কাছ থেকে ২৪ শতক জমি লিখে নিয়েছে। এ জমি নিয়ে কয়েক দফা সালিশ করেও মিমাংশা করা সম্ভব হয়নি। ওই বৃদ্ধ তার সহায় সম্পত্তি সন্তানদের নামে লিখে দিয়ে এখন নিঃস্ব হয়ে গেছে। ছেলেরা ভরণ-পোষণ দেওয়া তো দূরের কথা, যে ঘরটায় ছিল তার চালাও ভেঙ্গে দিয়েছে। যা দুঃখজনক ঘটনা।
অভিযোগের বিষয়ে সাজ্জাত গাজীর স্ত্রী নাসিমা খাতুন মুঠোফোনে বলেন, আমার শ্বশুর-শাশুড়িকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়নি। স্বেচ্ছায় তারা চলে গেছেন। জমি লিখে নিয়েছে ছোট দেবর সাঈদ গাজী। এ বিষয়ে সাঈদ গাজীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার ছেলে রবিউল ইসলাম জানায়, জমি সংক্রান্ত বিষয়ে তার বাবার সঙ্গে দাদা-দাদির কি হয়েছে সেটি তিনি জানেন না।
গৌরীঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম হাবিবুর রহমান বলেন, বৃদ্ধ বারিক গাজীর কাছ থেকে সন্তানেরা জমি লিখে নিয়ে ভরণপোষণ না দেওয়ায় ওই বৃদ্ধরা অসহায় হয়ে পড়েছে। বিষয়টি সুরাহা করার জন্য কয়েক দফা বসাবসি করেও কোন কাজ হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম আরাফাত হোসেন বলেন, ছেলেদের বিরুদ্ধে জমি লিখে নিয়ে বাবা-মাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।