ঝিকরগাছার আদম ব্যবসায়ী আনিসুরের কারাদণ্ড
নিজস্ব প্রতিবেদক,
যশোরে যুবককে বিদেশ পাঠানোর নামে প্রতারণা ও গুমের দায়ে ঝিকরগাছার কুমড়ি গ্রামের আদম ব্যবসায়ী আনিসুর রহমানের পৃথক ধারায় ১৩ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
মামলার ২৯ বছর পর এ রায় ঘোষনা করা হয়। বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক জয়ন্তী রানী দাস এ আদেশ দেন। সাজাপ্রাপ্ত আনিসুর রহমান ঝিকরগাছার কুমড়ি গ্রামের জামাত আলী মোড়লের ছেলে।
আদালত সূত্র জানায়, ১৯৯৩ সালে একই গ্রামের রওসানারা বেগমের ছেলে নুরুল হককে কুয়েতে নিয়ে ভালো বেতনে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ৭৫ হাজার টাকা দাবি করে। আনিসুরের কথায় বিশ্বাস করে রওসানারা স্বামীর রেখে যাওয়া সম্পত্তি ও তার স্থাবর অস্থাবর সব সম্পত্তি বিক্রি করে ৫৪ হাজার টাকা আনিসুরের হাতে তুলে দেন।
বাকি ২১ হাজার টাকা কুয়েতে পাঠানোর পর দেয়া হবে শর্তে ১৯৯৩ সালের ২৫ জুন নুরুলকে কুয়েতের উদ্দেশ্যে ঢাকাতে নিয়ে যায় আনিসুর। এরপর থেকে পরিবার তার আর খোঁজ পায়নি। পরবর্তিতে তারা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারেন আনিসুর রহমান নুরুলকে কুয়েতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে প্রতারণা করে পাকিস্থানে নিয়ে গেছে। পরে তাকে গুম করে ফেলেছে। একথা জানতে পারে মানসিকভাবে ভেঙে পরে মা রওসানারা।
এছাড়া অর্থনৈতিকভাবে দূর্বল হয়ে পরে তিনি ভিক্ষা করা শুরু করেন। পরবর্তীতে আনিসুর দেশে ফিরে আসলে নুরুলের সন্ধান চাইলে নানা তালবাহানা করে। অসহায় রওসানারা তার ছেলেকে ফিরে পেতে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বিষয়ে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পায়। এরমাঝে রওসানারা মানসিক ভারস্যাম্যহীন হয়ে পড়তে থাকে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তৎকালীন যশোর জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক অলিয়ার রহমান বাদী হয়ে ১৯৯৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি আদম ব্যবসায়ী আনিসুর রহমানকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমাদেন।
বৃহস্পতিবার মামলার রায় ঘোষনার দিনে আসামির উপস্থিতিতে রায় ঘোষনা করেন। রায়ে বিচারক ৪২০ ধারায় আনিসুরের তিন বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং ৩৬৪ ধারায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।