স্মার্ট মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে প্রতিবন্ধী হয়ে যাচ্ছে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা। এসব ছেলে-মেয়েরা, তাদের বাবা-মায়ের স্মার্ট মোবাইল ফোন নিয়ে সারাক্ষন ইন্টারনেট চালু করে গেম, টিকটকসহ বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইটে ঢুকছে এবং তাতেই আসক্ত হচ্ছে। যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জে এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে অহরহ।
দেখাগেছে, এইসব ছেলে-মেয়েদের হাতে মোবাইল ফোন না দিয়ে কান্নাকাটি, খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিচ্ছে। এমনকি মোবাইল ফোন নিতে না দিলে বা কেড়ে নিলে অভিমান করে আত্মহত্যা পর্যন্ত করছে। আর যেসব ছেলে-মেয়েরা মোবাইলের নেশায় আসক্ত হচ্ছে, তারা জগতের সমস্ত কিছু ভুলে যাচ্ছে। সারাক্ষন ঘরবন্ধি হয়ে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকছে। এসব ছেলে-মেয়েরা কোনো খেলাধুলা করতে চাই না। সারাদিন মোবাইল ফোন নিয়েই কাটিয়ে দিচ্ছে। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা মোবাইলে আসক্ত হয়ে তাদের নিজের ক্ষতি করছে, তা তারা বুঝতে পরেছে না। কিন্তু অভিভাবকরা কোনো মতেই মোবাইলের আসক্ত থেকে সরাতে পারছে না।
রাজগঞ্জের হানুয়ার গ্রামের শহিদুল ইসলাম (৩৭) নামের একজন অভিভাবক বলেন, বাচ্চাদের একি অবস্থা। মোবাইল ছাড়া তারা কিছুই বোঝে না। আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখন কতো খেলাধুলা করেছি। এখনকার ছেলে-মেয়েরা কোনো খেলাধুলা করে না। সারাক্ষন মোবাইল নিয়ে ঘরের ভিতর পড়ে থাকে। এভাবে মোবাইলে আসক্ত হলে, এই প্রজন্ম কি করবে? রাজগঞ্জের আশরাফুল ইসলাম (৪০) নামের একজন অভিভাবক বলেন, ছেলে-মেয়েদের মোবাইলের আসক্ত থেকে কি করে ঠেকাবো। তাদের হাতে মোবাইল না দিলে, অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। মোবাইলে আসক্ত প্রায়ই ছেলে-মেয়েরা মাথা এবং চোখের রোগে ভুগছে। রফিকুল ইসলাম (৫০) নামের একজন অভিভাবক বলেছেন, বাচ্চারা মোবাইল ফোনের নেশায় আসক্ত হয়ে এক সময় প্রতিবন্ধী হয়ে যাবে। কারন মোবাইল ফোনের নেশা, মাদকের চাইতে ভয়ংকার। মাদকের নেশায় বয়স্ক মানুষ জড়িয়ে পড়ে। আর এই বাচ্চারা তাদের জীবনের শুরুতেই মোবাইলের আগ্রাসী থাবার শিকার হচ্ছে। এরা ছোট থেকেই ভয়ংকার নেশাই আসক্ত হচ্ছে। এর প্রতিকার কি তা জানি না।
রাজগঞ্জ এলাকার একজন শিক্ষক বলেন, ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া ঠিকমতো করছে না। এক জরিপে দেখাগেছে- বই-খাতা ফেলে অধিকাংশ ছেলে-মেয়েরা মোবাইলে সময় দিয়ে থাকে। অভিভাবকরা মোবাইল ধরতে নিষেধ করলেই আত্মহত্যার হুমকি দেয় ছেলে-মেয়েরা। এই শিক্ষকও, তার বাচ্চা নিয়ে মহা বিপদে আছে। তিনিও এর প্রতিকার খুজে পাচ্ছে না। একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ বলেছেন, চোখের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসা রোগীর মধ্যে অধিকাংশই বাচ্চারা। এরা সবাই মোবাইলের পর্দায় চোখ রাখতে রাখতে এদের চোখ নস্ট হচ্ছে। বর্তমান প্রজন্ম এই ভাবে মোবাইলে আসক্ত থাকলে কি হবে তা বলা যাচ্ছে না। তিনি অভিভাবকদের সচেতন হতে বলেছেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।