মেহেরপুরে বিএডিসির বীজ উৎপাদন খামারে কর্মকর্তাদের অবহেলায় নষ্ট হতে বসেছে প্রায় ১শ একর জমির আমন ধান। রোপনের পর থেকেই অযত্নেই বেড়ে উঠছে ধানে গাছ গুলো। এ নিয়ে শ্রমিকরা একাধিকবার কর্মকর্তাদের বললেও কোন কর্নপাত করেনি তারা। পুরো জমি জুড়ে আগাছাই ছেয়ে গেছে। দেখার যেন কেও নেই। পরে শ্রমিকদের চাপে আগাছা নিড়ানি না দিয়ে ঘাস পোড়া বিষ প্রয়োগ করে বলে অভিযোগ তুলেছে বিএডিসি বীজ উৎপাদন খামারের শ্রমিকরা। বিষ প্রয়োগের ফলে মরতে বসেছে ১শ একর জমির ধান। শ্রমিকদের অভিযোগ আগাছা তোলার জন্য শ্রমিকদের একটা বরাদ্দ থাকে সেই বরাদ্ধের টাকার কোন হদিস নেই। শ্রমিকদের যাতে টাকা দেয়া না লাগে সেজন্য শ্রমিকদের কাজে না লাগিয়ে ঘাস পোড়া বিষ প্রয়োগ করে কর্মরত কর্মকর্তারা।
মেহেরপুরে শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দুরে চুয়াডাঙ্গা সড়কে বারাদী গ্রামে অসস্থিত সরকারি বীজ উৎপাদন খামার। চলতি মৌসুমে প্রায় ১শ ২০ একর জমিতে রোপন করা হয় আমন ধান। অযত্নে অবহেলায় বেড়ে ওঠা ধান গুলো থেকে কাঙ্খিতের চেয়ে অর্ধেকও ফলন পাওয়া যাবে না বলে দাবি শ্রমিকদের। বীজ উৎপাদন খামারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ১শ একর জমিতে চাষ করা হচ্ছে আমন ধান। তবে প্রতিটি প্লটেই ধানের চাইতে বড় হয়েছে আগাছা। নেই পর্যাপ্ত পানি। শুকিয়ে যাচ্ছে ধান গাছ।
বারাদী বীজ উৎপাদন খামারের কয়েকজন শ্রমিক জানান, আগাছা না তুলে বিষ প্রয়োগ করেছে অফিসাররা। কিন্তু ধানের জমিতে ঘাস পোড়া বিষ দিলে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়, এটা জেনেও তারা বিষ প্রয়োগ করেছে। ফলে ঘাস তো মরছেই সাথে সাথে ধান গাছও মরে যাচ্ছে। এছাড়াও শ্রমিকদের অভিযোগ বি প্লটে প্রায় ১৫ একর জমিতে অজ্ঞাত কারনে কোন ফসলের চাষ করেনি। অথচ নির্দেশ আছে এক টুকরো জমিও ফেলে রাখা যাবে না।
আব্দুর রদিশ নামের এক শ্রমিক জানান, প্রতিটি প্লটেই ধানের চাইতে বড় হয়েছে আগাছা। নিড়ানি দেয়ার কোন খবর নেই। বিষ দিয়ে ঘাস মারার চেষ্টা করা হয়েছে। রশিদ আরও বলেন, ধান রোপনের ২০-২২ দিন পর নিড়ানি দিয়ে আগাছা দমন করা প্রয়োজন। কিন্তু রোপনের পর থেকে মাস পেরিয়ে গেলেও একবারও দেয়া হয়নি নিড়ানি।
বীজ উৎপাদন খামারের শ্রমিক নেতা আলতাব হোসেন জানান, দিনের পর দিন নানা অনিয়ম করে চলেছে সদ্য বদলি হওয়া উপপরিচালক মনিরুজ্জামান ও অতিরিক্ত উপপরিচালক হুমায়ন কবির। তাদের অযত্নে ও অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে শত একর জমির আমন ধান। বারবার বলার পরও তারা নিড়ানি না দিয়ে বিষ প্রয়োগ করেছে। এতে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে সম্প্রতি কিছু জমিতে নিড়ানি দেয়া হয়েছে। কিন্তু যা ক্ষতি হওয়ার তা তো হয়েই গেছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত উপপরিচালক হুমায়ন কবিরের সাথে মুটোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন ভুল তো মানুষেরই হয়। এমনই হয়েছে। তবে এখন আর আগাছা নেই। আমরা দমন করে দিয়েছি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে সামান্য পরিমান জমিতে আগাছা দমন হয়েছে, এমন কথা হুমায়ন কবিরকে বলা হলে, তিনি অন্য ফোন এসছে বলে কল কেটে দেন। বর্তমানে সদ্য যোগদানকৃত উপপরিচালক মিনহাজ উদ্দিন চৌধুরির সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া না যাওয়ায় তার মন্তব্য নেয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।