যশোরের চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ৪৮ ঘন্টায় ১৭ শিশুর স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে। প্রসূতি মা’ ও শিশুরা সবাই সুস্থ আছেন। তারা হাসপাতাল থেকে বাড়িতেও চলে গেছেন। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে শনিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রসূতি ওয়ার্ডে এসব প্রসূতি মা’য়েরা স্বাভাবিকভাবে তাদের সন্তান প্রসব করেন। এসময় হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে কর্তব্যরত নার্স ও মিডওয়াইফ, স্বেচ্ছাসেবীরা এসব প্রসবে সহায়তা করেন। এসময়ে জন্ম নেয়া শিশুদের মধ্যে ৯জন মেয়ে ও ৮জন ছেলে।
চিকিৎসা কর্মকর্তারা বলছেন, প্রসব পূর্ববর্তী চিকিৎসার সময় স্বাভাবিক প্রসবের জন্য প্রসূতি মা’য়েদের কাউন্সিলিং করানো এবং হাসপাতালে চিকিৎসক ও সেবিকাদের সমন্বয়ে টিম ওয়ার্কের ফলেই হাসাপাতালে স্বাভাবিক প্রসূতি বেড়েছে।
প্রসূতি স্বাস্থ্য সেবায় উপজেলা পর্যায়ে দেশ সেরা হাসপতালটি বরাবরই স্বাভাবিক প্রসবেও (নরমাল ভ্যাজাইনাল ডেলিভারী) দেশ সেরা। ২০০৪ সাল থেকে হাসপাতালটি মোট ১৩ বার প্রসূতি সেবায় উপজেলা পর্যায়ে দেশ সেরার স্বীকৃতি স্বরুপ রাষ্ট্রীয় পদক পেয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, চলতি সেপ্টেম্বর মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে স্বাভাবিক প্রসব (নরমাল ভ্যাজাইনাল ডেলিভারী) হয়েছে ৭৩জন প্রসূতির। এরমধ্যে ১৪ সেপ্টেম্বর রাত থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর সকাল পর্যন্ত ৪৮ ঘন্টায় স্বাভাবিক ডেলিভারী হয়েছে ১৭ জন প্রসূতির। হাসপাতালটিতে সেপ্টেম্বরের ২ থেকে ১৬ তারিখ পর্যন্ত সিজারিয়ান ডেলিভারী হয়েছে ৪১জন প্রসূতির। আর বৃহস্পতি ও শনিবার সিজারিয়ান ডেলিভারী হয়েছে ৯ প্রসূতি মা’য়ের। হাসপতাল সূত্রে আরও জানা গেছে, আগস্ট মাসে হাসপাতালটিতে নরমাল ভ্যাজাইনাল ডেলিভারী হয় ১২৩ জন এবং সিজারিয়ান ডেলিভারী হয় ৮৮ জন প্রসূতির।
এ বিষয়ে হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে কর্তব্যরত মিডওয়াইফ মোসাঃ তামান্না আক্তার বলেন, ‘আমরা প্রসূতিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও তাদের প্রসবের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত করার কারনেই হাসপাতালে স্বাভাবিক প্রসূতি বেড়েছে।
হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আল এমরান বলেন, আমাদের মিডওয়াইফরা হাসপাতালে কোন প্রসূতি এলে তাদেরকে শারিরিক পরীক্ষার পাশাপাশি মানসিকভাবে প্রস্তুত করে তোলেন। তাদেরকে স্বাভাবিক প্রসবের জন্য উৎসাহিত করেন। এজন্য হাসপাতালে স্বাভাবিক প্রসব বেড়েছে।
চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোছাঃ লুৎফুন্নাহার বলেন, ‘গত কিছুদিন যাবৎ দেখছিলাম হাসপাতালে স্বাভাবিক প্রসবের পরিমান কিছুটা কমে যাচ্ছিলো। বিষয়টি নিয়ে আমার চিকিৎসক, সেবিকা, মিডওয়াইফ ও স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে মিটিং করে এ বিষয়ে প্রসূতিদের কাউন্সিলিং করানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। আমাদের এএনসি কর্ণারে (প্রসব পূর্ববর্তী সেবাকেন্দ্র) হাসপাতালে সেবা নিতে আসা সকল প্রসূতির মোবাইল নম্বর রাখা হয়। প্রসবের দিনের ২৪ ঘন্টা আগে তারা হাসপাতালে না এলে তাদের ফোন করে হাসপাতালে আনা হয়। মূলত আমাদের টিম ওয়ার্কের ফসল ৪৮ ঘন্টায় এই ১৭ শিশুর স্বাভাবিক প্রসব।’ তিনি বলেন, সকল শিশু এবং প্রসূতিরা সুস্থ আছেন। তারা নিজেদের বাড়িতে চলে গেছেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।