ঝিকরগাছায় স্বাক্ষর জাল করে সরকারি টাকা আত্মসাৎ

আগের সংবাদ

সাতক্ষীরায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের হাতে শত শত গাছের চারা তুলে দিচ্ছেন স্বপন

পরের সংবাদ

এডিসি হারুনের পরিবারের রাজনীতি নিয়ে ধোঁয়াশা!

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৩ , ৯:২৪ অপরাহ্ণ আপডেট: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৩ , ৯:২৪ অপরাহ্ণ

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের পেটানোর ঘটনায় বরখাস্ত হয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদ। তাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। তার দাবি, এডিসি হারুন ছাত্রদলকর্মী ছিলেন এবং তার পরিবারের সদস্যরা বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

তবে এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে গিয়ে হারুনের গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের থানাঘাটা গ্রামের স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেছে মিশ্র তথ্য। কেউ বলছেন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত আবার কেউ বলছেন বিএনপি-জামাতের রাজনীতি করেছেন হারুন। হারুনের বাবা জামালউদ্দীন গাজীর বাড়ি ছিল একই ইউনিয়নের বালিয়াখালী গ্রামে। তবে বর্তমানে তারা থানাঘাটা গ্রামে বসবাস করেন। জামালউদ্দীন গাজী মাড়িয়ালা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন। বর্তমানে তিনি অবসর জীবন-যাপন করছেন। হারুনের মা শেফালী বেগম একজন গৃহিণী। বাবার কর্মস্থল মাড়িয়ালা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন হারুন। পরবর্তীতে সাতক্ষীরা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যয়নকালে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটির (টিপু-বাদশা কমিটি) বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপসম্পাদক ছিলেন হারুন। তার ছোট ভাইয়ের নাম শরীফুল ইসলাম।

তিনি সাইফুর রহমান সোহাগের নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ক্রীড়া বিষয়ক উপ-সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে তিনি খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন। তবে তার পরিবারের আর কেউ সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। ইউনিয়নের সাবেক যুবলীগ নেতা মো. সোহেল হোসেন বলেন, হারুন ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত হন। তার ছোট ভাই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন। তিনি কখনো ছাত্রদল করত এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। এছাড়া তার বাবা একজন স্কুল শিক্ষক। এলাকায় তিনি সবার কাছে সম্মানিত ব্যক্তি।

ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান প্রভাষক দীপঙ্কর বাছাড় বলেন, হারুনের নানা হাজরাখালী গ্রামের বাবর আলী সানা মুসলিম লীগ ও জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাদের পরিবারের অন্যরা বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আবু হেনা সাকিল বলেন, হারুনের পরিবারের লোকজন দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বিশেষ করে গত দুটি সংসদ নির্বাচন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হারুনের বাবা-মা নৌকার পক্ষে মানুষের কাছে ভোট চেয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, তার নানার পরিবারের সঙ্গে জমাজমি নিয়ে বিরোধের কারণে ইউনিয়নের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন জোয়ারদার ও তার ছেলে পলাশ বিভিন্ন স্থানে তাকে জামায়াত-বিএনপি বানানোর চক্রান্ত করছেন। আশাশুনি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা অসীম বরণ চক্রবর্তী বলেন, হারুনের বাবা শিক্ষক ছিলেন, এলাকায় তিনি একজন সৎ ও ভাল মানুষ হিসেবে পরিচিত। তাদের আর্থিক অবস্থাও খুব বেশি ভাল না। তার ভাই শরীফুল ইসলামও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন। তারা সব সময় আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেছেন। তিনি এখন বিপদে পড়েছেন এজন্য প্রতিপক্ষরা তার পরিবারকে জামায়াত শিবির বানিয়ে তার ক্ষতি করতে চায়।

এডিসি হারুনের মা শেফালি বেগম বলেন, পরিবারের সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আমার দুই ছেলে সরাসরি ছাত্রলীগের রাজনীতি করতো। ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর থেকে একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে। মূলত গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমার স্বামী ও ছেলেরা আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুহেনা সাকিলের পক্ষে থাকায় বর্তমান স্বতন্ত্র চেয়ারম্যানের লোকজন জামায়াত বানানোর অপচেষ্টা করছেন।

তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী একজন স্কুল শিক্ষক, আমি গৃহিণী, গ্রামে আমাদের ছোট একটি বাড়ি আছে। অনেক কষ্টে ছেলেদের পড়াশোনা শিখিয়েছি। এলাকায় আমাদের একটি বাড়ি ছাড়া অঢেল সম্পত্তি নেই। বর্তমানে আমরা স্বামী স্ত্রী ঢাকায় অবস্থান করছি। বাড়িতে তালা দিয়ে এসেছি। ছেলের বিপদের সময় যারা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলে অপপ্রচার করছে তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহর কাছে বিচার দিলাম।

এসএমরা/জেআ

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়