টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা হাবিব খান। তিনি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের কালিয়ানপাড়া এলাকায় দেড় একর জমিতে ফিলিপাইন জাতের আখ চাষ করে বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়েছেন।
চাকরি ছেড়ে কৃষির প্রতি ঝুঁকে হাবিব খান এবার তার ‘খান এগ্রো’ নামের সমন্বিত খামারে চাষ করেছেন ফিলিপাইনের কালো জাতের আখ (ব্ল্যাক-সুগার-কেইন)। এ ছাড়াও রঙিন সাগর কলা, টপ লেডি জাতের পেঁপে, মাছ ও উচ্চফলনশীল জাতের সজিনাও আবাদ করেছেন। ফিলিপাইনের কালো জাতের আখ সুমিষ্ট ও ব্যবসায়িকভাবে লাভজনক হওয়ায় আশপাশের চাষিরাও এ জাতের আখ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
আখগুলোর বাইরের অংশ দেখতে কালো খয়েরি। লম্বায় সাধারণত ১৫ থেকে ২০ ফুট। দেশীয় আখের মতো হলেও এর আছে বেশ কিছু ভিন্নতা। এই আখের কাণ্ড কিছুটা নরম, রস বেশি, মিষ্টি আরও বেশি, চাষের পর লাভ বেশি। এসব কথা ভেবেই অনেক চেষ্টার পর ফিলিপাইনের কালো জাতের আখ চাষ করেছেন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা হাবিব খান। এ ফসলে তার সঙ্গে ব্যবসায়িক পার্টনার রয়েছে তার চাচাতো ভাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অনিক খান। বাকি সমন্বিত খামারের অন্যান্য চাষ তিনি একাই করেছেন।
সম্প্রতি সরেজমিনে হাবিব খানের সমন্বিত ‘খান এগ্রো’ খামারে গেলে তিনি বলেন, ২০১৭ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ শেষ করে ঢাকায় একটি পোশাক শিল্প কারখানায় চাকরি নেন। সেখানে ৫ বছর চাকরি করার পর আর ভালো লাগছিল না। বন্দি জীবন তার একঘেয়েমি হয়ে উঠে। যেহেতু তিনি কৃষকের সন্তান তাই কৃষিতে মনোনিবেশের ভাবনা থেকে চাকরি ছেড়ে দেন। বাড়িতে ফিরে বিভিন্ন জনের সঙ্গে বোঝাপড়া ও ইউটিউব ঘেঁটে ফিলিপাইন জাতের উচ্চফলনশীল কালো আখ চাষ শুরু করেন। তিনি এবার ১০ হাজার আখের চারা রোপন করেছেন।
তার বাগানে দেখা যায়, আখগুলো দেশীয় প্রজাতির আখের তুলনায় বেশি লম্বা। গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত পুরো। ২/৩ মাস পরেই আখ বিক্রি করতে পারবেন। এতে তার উৎপাদন ব্যয় হয়েছে ৮ লাখ টাকা। তিনি এবার ১৬ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। বাগানের চলাচলের রাস্তার দুই ধারে লাগানো ফিলিপাইনের কালো জাতের আখ এখন তার বাগানে শোভা পাচ্ছে। আখ লম্বায় বড় হওয়ায় যেন ভেঙে না যায় সে জন্য বাঁশ, সুতা দিয়ে মাচা তৈরি করে আটকে রাখা হয়েছে।
এ ছাড়াও তিনি ৩ হাজার রঙিন সাগর কলা রোপন করেছেন। এতে জমি লিজসহ উৎপাদন খরচ প্রায় ৭ লাখ টাকা হয়েছে। বিক্রির লক্ষ্য মাত্রা ধরেছেন ১২ লাখ টাকা। টপ লেডি জাতের উচ্চফলনশীন পেঁপে ১ একর জমিতে ১০০০ হাজার চারা রোপন করেছেন। এতে জমির লিজসহ উৎপাদন খরচ হয়েছে ৪ লাখ টাকা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।