বিদ্যুৎবিভ্রাটে তছনছ জনজীবন, ব্যাহত কারখানার উৎপাদন

আগের সংবাদ

গান কবিতা নৃত্যে আগস্টের স্মৃতি

পরের সংবাদ

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পুলিশ-ইন্টার্ন চিকিৎসক সংঘর্ষে আহত ৮

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৩ , ২:১৪ অপরাহ্ণ আপডেট: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৩ , ২:১৪ অপরাহ্ণ

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আগে রোগী দেখাতে চাওয়া নিয়ে তুলকালাম ঘটেছে। বুধবার রাতে এ নিয়ে পুলিশ ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ ক্যাম্পে ভাঙচুর হয়েছে। সংঘর্ষে অন্তত আট চিকিৎসক আহত হন। এর মধ্যে দু’জনকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ ও এক কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত এবং পুলিশ ক্যাম্প সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে তিন দিনের কর্মবিরতি ঘোষণা করেছে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ।

বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক মাহমুদুল হাসান। তাঁর বাড়ি শেরপুরে। তিনি কক্সবাজার পুলিশ লাইন্সে কর্মরত। অন্য রোগীরা অপেক্ষমাণ থাকলেও স্ত্রীকে আগে দেখানোর জন্য টিকিট নিয়ে যান মাহমুদুল হাসান। ওই সময় দায়িত্বরত আনসার সদস্য তাঁকে  ধাক্কা দেন। তাঁর ছেলে মাহাদি হাসান এর প্রতিবাদ করলে কর্তব্যরত ইন্টার্ন চিকিৎসক রোগীর স্বজনদের বাইরে নিয়ে যেতে বলেন আনসার সদস্যকে। ওই সময় ইন্টার্ন চিকিৎসককে গালি দেন মাহাদি। এ নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার এক পর্যায়ে মাহমুদুল হাসান ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চান। পরে মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা রোগীসহ স্বজনদের ক্যাম্পে নিয়ে যান।

এদিকে ইন্টার্ন চিকিৎসককে নিয়ে পুলিশ ক্যাম্পে যান ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি মাহিদুল হক অয়ন। চিকিৎসকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করার কারণ জিজ্ঞেস করায় তখন বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। এ সময় মাহাদিকে আঘাত করলে পুলিশ সদস্যরা বাধা দেন। এতে আঘাত পান ডা. অয়ন। এ খবর পেয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা পুলিশ ক্যাম্পে গেলে সংঘর্ষ বাধে। এতে আহত হওয়ায় ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাবেক সভাপতি ডা. শামীম রেজা ও ডা. সাদিককে আইসিইউতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এ ঘটনায় রাতেই হাসপাতালে বৈঠক হয়। এতে সিটি মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু, জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা ও হাসপাতালের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘ আলোচনার পর পুলিশ মেডিকেল ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই রফিকুল ইসলাম ও কনস্টেবল আরিফুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ক্যাম্পটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ শাহ কামাল আকন্দ। ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।

দুই তদন্ত কমিটি

ইন্টার্ন চিকিৎসকের ওপর রোগীর স্বজন এবং পুলিশের হামলার প্রতিবাদে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বৃহস্পতিবার থেকে তিন দিনের কর্মবিরতি পালন করছেন। এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের পক্ষ থেকে পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসকদের নিয়ে আলোচনায় বসে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে।

পুলিশের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

চিকিৎসকদের মারধরের ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জরুরি সভা করে। সভার পর কয়েকজন পুলিশ সদস্যের নাম উল্লেখ করে এবং আরও কয়েকজনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে থানায় মামলার আবেদন করা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, পুলিশ কারও ওপর হামলা করতে যায়নি। পুলিশ যতটুকু করেছে তা আত্মরক্ষার্থে। চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে মামলা হলে পুলিশ ক্যাম্পে হামলা ও ভাঙচুরেরও মামলা হতে পারে।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মো. গোলাম ফেরদৌস বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে হাসপাতালের চিকিৎসকদের দিয়ে সেবা চালু রাখা হবে। চিকিৎসাসেবা ব্যাহত যেন না হয়, সে দিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়